ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা: জুতা-স্যান্ডেলের দোকানে উপচে পড়া ভিড়
ঈদ মানেই আনন্দ, আর নতুন পোশাক ও সাজসজ্জার সঙ্গে জুতা ও স্যান্ডেলেরও রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। জামা-কাপড় কেনাকাটা শেষ হতেই এবার ক্রেতারা ছুটছেন জুতা ও স্যান্ডেলের দোকানে। খুলনার নগরীর ডাকবাংলা মোড় ও আশপাশের এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে জুতা ও স্যান্ডেলের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দোকান মালিক ও কর্মচারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতাদের সামাল দিতে।
শনিবার (২৯ মার্চ) নগরীর ডাকবাংলা মোড়ের কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত ক্রেতারা ভিড় জমিয়েছেন দোকানগুলোতে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গেল বছরের তুলনায় এবার জুতা-স্যান্ডেলের দাম বেশি।
ডাকবাংলা মোড়ের স্টেপ নামের এক দোকানের ব্যবস্থাপক মোঃ মুরাদ হোসেন জানান, ১০ রমজানের পর থেকেই তার দোকানে বেচাকেনা শুরু হয়েছে এবং রমজান শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় অব্যাহত থাকবে। তার দোকানে শুধুমাত্র চায়না জুতা ও স্যান্ডেল পাওয়া যায়, দেশীয় পণ্য নেই বলেও জানান তিনি। উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীদের কাছে তাদের কালেকশন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
তিনি আরও জানান, তার দোকানে দুই ফিতার স্লিপার ৬৯০-১৮০০ টাকা, হাফ লোফার ১৮০০-২৪০০ টাকা এবং স্লাইডড ৬৯০-১৩৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ডলার সংকটের কারণে ইমপোর্টাররা ছোট বাচ্চাদের উপযোগী সাইজের জুতা আনতে পারছেন না, ফলে তার দোকানে ছোটদের জন্য জুতা-স্যান্ডেল নেই।
এক তরুণী জানান, পোশাকের সাথে মিলিয়ে সঠিক স্যান্ডেল খুঁজতে গিয়ে অনেক দোকান ঘুরতে হয়েছে তাকে। অবশেষে স্টেপ থেকে স্টেনযুক্ত একটি স্যান্ডেল কেনেন, তবে দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
লোটোর শোরুম ইনচার্জ কাজী জামিল ইসলাম জানান, তরুণদের মধ্যে লোফার, মেকাসিন এবং স্পোর্টস স্যান্ডেল বেশি জনপ্রিয়। তরুণীরা চাপলিস, স্লিপার ও ফ্লিপফ্লপ পছন্দ করেন। বিক্রির সবচেয়ে ব্যস্ত সময় হয় ইফতারের পর, আর ঈদের আগের রাতে বিক্রি সারারাত চলবে বলেও জানান তিনি। লোটো যেহেতু ইতালিয়ান ব্র্যান্ড, তাই ক্রেতারা এর ওপর আস্থা রাখেন বলে তিনি মনে করেন।
সম্রাট বাজারে কথা হয় ছোট্ট তাসফিনের সাথে, যে জানায়, রোজার শুরুতেই নতুন জামা ও পাঞ্জাবি কিনেছে। তবে পাঞ্জাবির সাথে মানানসই স্যান্ডেল না হলে চলে না! তাই বাবা-মায়ের সাথে দুপুরে স্যান্ডেল কিনতে এসেছিল সে। পছন্দের স্যান্ডেল পেয়ে বেশ খুশি হলেও, তার বাবার অভিযোগ—এবার জুতার দাম অনেক বেশি।
ঈদকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ক্রেতাদের এমন ব্যস্ততা জুতা-স্যান্ডেল বিক্রেতাদের জন্য বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হলেও, দাম বাড়ায় সাধারণ ক্রেতারা কিছুটা হতাশ। তবে ঈদের আনন্দে নতুন জুতা-স্যান্ডেল কেনার উচ্ছ্বাসে কোনো ভাটা পড়েনি।