খুলনায় ঈদ বাজার, তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে পাকিস্তানি থ্রিপিস
হকার থেকে সুপার মার্কেট—ঈদকে সামনে রেখে বেচাকেনার সরগরম খুলনার বিপণি বিতানগুলো। দেশি-বিদেশি পণ্যের ভিড়ে গুরুত্ব পাচ্ছে ক্রেতার রুচি ও পছন্দ। ঈদের আবহে নারীদের সাজ-পোশাকের চাহিদা তুঙ্গে। নগরীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতাদের চাপ তত বাড়ছে।
ক্রেতাদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন দোকানীরা, তবে এবার ঈদের বাজারে পাকিস্তানি পোশাকের আধিপত্য লক্ষ্য করা গেছে। দেখতে সুন্দর ও ওয়েটলেস হওয়ায় তরুণী ও যুবতীদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে পাকিস্তানি পোশাক। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গেল বছরের তুলনায় এবার পোশাকের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ডলারের দাম বেশি হওয়ার কারণে পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড়ের খুলনা শপিং কমপ্লেক্সে ক্রেতাদের প্রচণ্ড চাপ লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে, মারিয়াম এন্টারপ্রাইজ ও বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামক দুটি দোকানে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। এবার এই দোকানগুলোতে ভারতীয় পোশাকের উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল, তবে পাকিস্তানি পোশাকের সমারোহ বেশি ছিল। জনপ্রিয় পাকিস্তানি ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে নুরস, মতিস, নিভাইস এবং তাওক্কাল। এসব পোশাক ৪,৫০০ থেকে ৭,০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
মারিয়াম এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মোঃ আলামিন হোসেন মিঠু বলেন, “ক্রেতাদের আকর্ষণ এখন পাকিস্তানি পোশাকের দিকে বেশি। টিস্যু ও ওয়েটলেস হওয়ায় ক্রেতারা পাকিস্তানি পোশাক নিচ্ছেন বেশি। ভারতীয় পণ্যের যে আধিপত্য ছিল, তা এখন অনেকটাই কমে গেছে। তবে দেশীয় টেক্সটাইল খাতের উন্নতির কারণে দেশি কোম্পানিগুলোও মানসম্পন্ন কাপড় তৈরি করছে।”
খুলনা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রথম বর্ষের ছাত্রী আইরিন ইসলাম বলেন, তিনি দেড় ঘণ্টা ঘুরে পাকিস্তানি শারারা ও গারারা কিনেছেন। বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেঁটে পোশাকটি পছন্দ করেছেন, তবে তার দাবি, গত বছরের তুলনায় দাম বেশি।
বিপণি কেন্দ্রের লেটেস্ট কর্নারের কর্মচারী মোঃ রাজিব জানান, “১০ রমজানের পর থেকে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। দিন যত ঘনিয়ে আসছে, বিক্রি তত বাড়ছে। বাজারে জিমুচি ফেব্রিক্স এবং শারারা-গারারার বিক্রি ভালো চলছে। অনেক তরুণী এই পোশাক কিনতে আসছেন।
অপরদিকে, পাঞ্জাবির দোকানেও ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। খুলনা বিপণি বিতান কেন্দ্রের ‘পাঞ্জাবি ঘর’-এর মালিক হুজাইফা জানান, “১০ রমজানের পর থেকে পাঞ্জাবির বিক্রি বেড়েছে। নতুন মডেলের তেমন কোনো পাঞ্জাবি না আসলেও, স্টার ও টপটেন ব্র্যান্ডের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে। স্টার পাঞ্জাবি ৮০০ থেকে ১,২০০ টাকায় এবং টপটেন ১,০০০ থেকে ২,৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।”
পাঞ্জাবির ক্রেতাদের মধ্যে তরুণ, যুবক ও মধ্যবয়সীদের সংখ্যা বেশি, তবে পরিবারের কাপড় কিনতে আসা নারী ক্রেতাদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।
এদিকে, খুলনা বিপণি কেন্দ্রের সামনে হকার আব্দুল লতিফ বলেন, “আগের তুলনায় বেচাকেনা বেড়েছে। আমার দোকানে নিম্নআয়ের মানুষের সমাগম বেশি।”
খুলনা সিমেট্রি রোডের জুতার দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে, তবে অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, পছন্দের জুতার দাম গত বছরের তুলনায় বেশি। ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, “গত বছরের তুলনায় জুতার কালেকশন তেমন ভালো নয়, তবে দাম অনেক বেশি।” দোকানিরা জানান, আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে জুতার দাম তুলনামূলক বেশি রাখা হচ্ছে।