ঢাকা ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ; ১৪৪ ধারা জারি

মোশফিকুর রহমান স্বপন, সুনামগঞ্জ::

ছবি: চেকপোস্ট

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদীন আদালতে অভিযোগ করেছেন। গায়ের জোরে ওই জমি দখলে নিতে সীমানার খুঁটি উপড়ে ফেলার অভিযোগ তোলা হয়েছে বিএনপি নেতা আলী আহমেদ দুলালের বিরুদ্ধে।

তবে আলী আহমেদ দুলালের দাবি, জয়নাল আবেদীনের অভিযোগ সত্য নয়। তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপির কোনো কমিটিতে নেই। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’ উল্টো তিনি দাবি করেন, জয়নাল আবেদীন তার বোনের পাশের জমির দেড়শতক দখল করছেন।

জয়নাল আবেদীনের অভিযোগের পর থানা পুলিশ সরেজমিনে গিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে উত্তর বৌগলারখাড়া মৌজার এ জমি দখলের অভিযোগ করেছেন তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমির প্রকৃত মালিক জয়নাল আবেদীন। তিনি ১৮ বছর আগে জমিটি ক্রয় করেছেন এবং দখল করে আছেন। অথচ হঠাৎ করে বিএনপি নেতা দাবি করে দুলাল মিয়া জমিটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তেহকিয়া গ্রামের নাছির মিয়া বলেন, ‘আমরা জানি জয়নাল আবেদীন এই জায়গার মালিক। তিনি ১৮ বছর আগে জমিটি কিনেছেন। এখন দুলাল নামে একজন বিএনপি নেতা নিজের বলে দাবি করে দখল করতে চাচ্ছে।’

আশিকুর রহমান জানান, ‘আমরা ২২ জন মিলে এই কান্দার জায়গা ক্রয় করেছি। ২২ জনের উপস্থিতিতে জয়নাল আবেদীনকে ৪ শতক জমি মেপে দেওয়া হয়েছে। যখন জায়গা মাপা হয়েছে তখন দুলালও ছিলেন। অথচ এখন তিনি বিএনপির প্রভাব খাটাচ্ছেন।’

তেহকিয়া গ্রামের রিপন মিয়া বলেন, ‘এই জায়গা ১৮ বছর আগে জয়নাল আবেদীন কিনেছেন। এখন দুলাল এসে খুঁটি উপড়ে ফেলেছে। বিএনপির ক্ষমতা দেখাচ্ছে এবং চাঁদা দাবি করছে।’

জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমি ২০০৭ সাল থেকে এই জমির মালিক। আমি কারো জমি দখল করিনি। আমার জায়গা এক দাগে, তাদের জায়গা আরেক দাগে। তারা জোরপূর্বক আমার জমিতে এসে খুঁটি উপড়ে ফেলেছে। আমি আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

অন্যদিকে, আলী আহমদ দুলাল বলেন, ‘আমরা ভট মেম্বার সাহেব ও তার ভাইদের কাছ থেকে জমি কিনেছি। ক্রয় করা জমিতে এসে তারা কীভাবে খুঁটি পুঁততে পারে? আমরা বারবার বলেছি, কাগজ নিয়ে আসতে, কিন্তু তারা তা আনেনি। গ্রামের লোকজনের উপস্থিতিতে আমি খুঁটি তুলেছি।’

শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরাম আলী বলেন, ‘ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা যেন অবনতি না হয়, এজন্য আমরা ১৪৪ ধারা জারি করেছি। ভূমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষ জমি থেকে দূরে থাকবেন।’

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৫:৪৩:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
৫৫৭ বার পড়া হয়েছে

সুনামগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ; ১৪৪ ধারা জারি

আপডেট সময় ০৫:৪৩:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদীন আদালতে অভিযোগ করেছেন। গায়ের জোরে ওই জমি দখলে নিতে সীমানার খুঁটি উপড়ে ফেলার অভিযোগ তোলা হয়েছে বিএনপি নেতা আলী আহমেদ দুলালের বিরুদ্ধে।

তবে আলী আহমেদ দুলালের দাবি, জয়নাল আবেদীনের অভিযোগ সত্য নয়। তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপির কোনো কমিটিতে নেই। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’ উল্টো তিনি দাবি করেন, জয়নাল আবেদীন তার বোনের পাশের জমির দেড়শতক দখল করছেন।

জয়নাল আবেদীনের অভিযোগের পর থানা পুলিশ সরেজমিনে গিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে উত্তর বৌগলারখাড়া মৌজার এ জমি দখলের অভিযোগ করেছেন তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমির প্রকৃত মালিক জয়নাল আবেদীন। তিনি ১৮ বছর আগে জমিটি ক্রয় করেছেন এবং দখল করে আছেন। অথচ হঠাৎ করে বিএনপি নেতা দাবি করে দুলাল মিয়া জমিটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তেহকিয়া গ্রামের নাছির মিয়া বলেন, ‘আমরা জানি জয়নাল আবেদীন এই জায়গার মালিক। তিনি ১৮ বছর আগে জমিটি কিনেছেন। এখন দুলাল নামে একজন বিএনপি নেতা নিজের বলে দাবি করে দখল করতে চাচ্ছে।’

আশিকুর রহমান জানান, ‘আমরা ২২ জন মিলে এই কান্দার জায়গা ক্রয় করেছি। ২২ জনের উপস্থিতিতে জয়নাল আবেদীনকে ৪ শতক জমি মেপে দেওয়া হয়েছে। যখন জায়গা মাপা হয়েছে তখন দুলালও ছিলেন। অথচ এখন তিনি বিএনপির প্রভাব খাটাচ্ছেন।’

তেহকিয়া গ্রামের রিপন মিয়া বলেন, ‘এই জায়গা ১৮ বছর আগে জয়নাল আবেদীন কিনেছেন। এখন দুলাল এসে খুঁটি উপড়ে ফেলেছে। বিএনপির ক্ষমতা দেখাচ্ছে এবং চাঁদা দাবি করছে।’

জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমি ২০০৭ সাল থেকে এই জমির মালিক। আমি কারো জমি দখল করিনি। আমার জায়গা এক দাগে, তাদের জায়গা আরেক দাগে। তারা জোরপূর্বক আমার জমিতে এসে খুঁটি উপড়ে ফেলেছে। আমি আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

অন্যদিকে, আলী আহমদ দুলাল বলেন, ‘আমরা ভট মেম্বার সাহেব ও তার ভাইদের কাছ থেকে জমি কিনেছি। ক্রয় করা জমিতে এসে তারা কীভাবে খুঁটি পুঁততে পারে? আমরা বারবার বলেছি, কাগজ নিয়ে আসতে, কিন্তু তারা তা আনেনি। গ্রামের লোকজনের উপস্থিতিতে আমি খুঁটি তুলেছি।’

শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরাম আলী বলেন, ‘ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা যেন অবনতি না হয়, এজন্য আমরা ১৪৪ ধারা জারি করেছি। ভূমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষ জমি থেকে দূরে থাকবেন।’