সাস্থ্য দপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা: মো: মনজুরুল মোরশেদ বলেছেন, যক্ষ্মা এখন আর মারাত্মক রোগ নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য রোগ। তিনি আরও বলেন, যক্ষ্মা হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, নিয়মিত ঔষধ সেবন করলে এ থেকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব। তিনি এসব কথা আজ (২৪ মার্চ) খুলনায় বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জানান। সভাটি নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।
এ বছরের বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল “প্রতিশ্রুতি। বিনিয়োগ ও সেবাদান দ্বারা সম্ভব হবে যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ গড়া।”
ডা: মোরশেদ আরও বলেন, যক্ষ্মা নির্মূলের লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি জানান, ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করার জন্য কাজ চলছে। প্রতি বছর দেশে তিন লাখের বেশি মানুষের যক্ষ্মা রোগ সনাক্ত হয়, তবে ১৭ শতাংশ রোগী শনাক্তের বাইরে থেকে যায়। তিনি বলেন, “এ রোগে আক্রান্ত সকলকে শনাক্ত করার চেষ্টা করতে হবে এবং বর্তমানে শনাক্ত হওয়া শতভাগ রোগীকে চিকিৎসার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ৩০টি যক্ষ্মা প্রবণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সপ্তম স্থানে রয়েছে, তাই রোগটি প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
এ সময় খুলনার সিভিল সার্জন ডা: মোছা: মাহফুজা খাতুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডা: মো: আবু শাহিন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: মো: মোহসিন আলী ফরাজী, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের উপ পরিচালক মো: মুজিবুর রহমান, যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ ডা: মো: আনোয়ারুল আজাদ, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: মো: রফিকুল ইসলাম গাজী, ব্রাকের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো: আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে যক্ষ্মা উপসর্গ রয়েছে এমন প্রায় ৩০ লাখ ব্যক্তিকে পরীক্ষার মাধ্যমে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৬২৪ জন যক্ষ্মা রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮৫ হাজার ৬০৮ জন, চট্টগ্রামে ৬০ হাজার ৩০৯ জন, রাজশাহীতে ৩৫ হাজার ৮১৯ জন, রংপুরে ৩৪ হাজার ৮৩৩ জন, খুলনায় ৩৪ হাজার ১৪ জন, বরিশালে ১৯ হাজার ৬০০ জন, সিলেটে ২২ হাজার ২২ জন এবং ময়মনসিংহে ২১ হাজার ৪১৯ জন রোগী সনাক্ত হয়েছে।
এর আগে সিএসএস আভা সেন্টারের চত্বর থেকে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় সরকারি কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী, কেসিসি সহ ব্রাক, পিমে সিস্টারস, কেএমএসএস, নাটাব, পিকেএস এবং দীপ শিখাসহ বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।