ঢাকা ০২:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এত আমদানির পরও খুলনায় চালের বাজার অস্থির

মোঃ রবিউল হোসেন খান, খুলনা::

ছবি: প্রতিকী

সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রতি সপ্তাহে চাল আমদানি হচ্ছে। সরকার আরও ৫০ হাজার মেট্রিকটন চাল কেনার প্রস্তুতি নিয়েছে। নওয়াপাড়া ও খুলনার বেসরকারি গুদামগুলোতে মজুদ অনেক বেশি। সরকারি গুদামে জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে। আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বোরো চাল বাজারে উঠতে শুরু করবে। তবে এত আমদানির পরও খুলনায় চালের বাজার অস্থির। সর্বনিম্ন প্রতিকেজির মূল্য ৫১ টাকা, সর্বোচ্চ ৯৮ টাকা।

জেলা খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত থেকে ৫৫ হাজার মেট্রিকটন ননবাসমতি চাল আসে। মিয়ানমার থেকেও কিছু সিদ্ধ চাল এসেছে। মার্চ মাসে এ পর্যন্ত ৪২ হাজার মেট্রিকটন চাল নিয়ে ৯টি জাহাজ মোংলা বন্দরে নোঙর করেছে। আর্জেন্টিনা থেকে এসেছে ১৯ হাজার ৭০০ মেট্রিকটন গম। এছাড়া চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, যশোরের বেনাপোল এবং সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে ৮৮ হাজার মেট্রিকটন চাল এসেছে।

এ অঞ্চলের আমদানিকারকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো খুলনার বটিয়াঘাটার আর এল ইন্টারন্যাশনাল, খুলনা নগরীর কে এন ট্রেডার্স, পলি এন্টারপ্রাইজ, বাগেরহাটের ফকিরহাটের জয় ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, সাতক্ষীরার কলারোয়ার পলাশ এন্টারপ্রাইজ, মুকুল এন্টারপ্রাইজ, যশোরের ঝিকরগাছার ইসমাইল হোসেন মিরন, নাভারনের ইসলামপুর রাইস মিল, অভয়নগরের জাহাঙ্গীর হোসেন, শার্শার সরদার অ্যালুমিনিয়াম স্টোর, নাভারনের মৌসুমি ট্রেডার্স, ঝিকরগাছার ইমু, রেজাউল অ্যান্ড সন্স, বাগআঁচড়ার আব্দুল খালেক ও যশোর পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের রুশ ইন্টারন্যাশনাল।

খুলনা বিভাগের চালাচল ও সংরক্ষক নিয়ন্ত্রক (খাদ্য) মশিউর রহমান জানিয়েছেন, চালের কোনো ঘাটতি নেই। সরকার এ মাসে আরও ৫০ হাজার মেট্রিকটন চাল কিনছে। দক্ষিণ জনপদের মানুষের কাছে আতপ চালের চাহিদা কম থাকায় পাকিস্তানি চাল মোংলা বন্দরে আসছে না। সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। তাই দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।

খুলনার বড় বাজারের ব্যবসায়ী পিকে ট্রেডার্সের মালিক জানিয়েছেন, স্থানীয় বাজারে ভারতীয় চালের চাহিদা বেড়েছে। খুলনা অঞ্চলের রাইস মিলগুলোতে ধানের সংকট থাকায় চাহিদা অনুযায়ী চাল পাওয়া যাচ্ছে না। মিনিকেট প্রতি কেজি ৬১ টাকার পরিবর্তে ৬৪ টাকা, বাসমতি ৬৬ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, নাজিরশাইল ৫৮ টাকার পরিবর্তে ৬১ টাকা, বালাম ৫১ টাকার পরিবর্তে ৬৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শাহাজাহান ভাণ্ডারের ম্যানেজার গৌতম বিশ্বাস জানিয়েছেন, মোটা হিরা ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা এবং রত্না বালাম ৫৮ টাকার পরিবর্তে ৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় মহামায়া, আর এস গোল্ড ও রত্না আয়াজ ৩৬ জাতের চালের চাহিদা বেশি বলে জানান তিনি।

খুলনার সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তৈয়বুর রহমান জানিয়েছেন, খুলনার দুটি কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামে ৪৭ হাজার টন চাল মজুদ রয়েছে।

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি, কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান জানিয়েছেন, স্থানীয় হাটগুলোতে মিনিকেট ধান নেই, তাই রাইস মিলগুলো যথারীতি চাল সরবরাহ করতে পারছে না।

স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, প্রতি মণ ধান এখন ১,৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা বোরো মৌসুমের শুরুতে ১,১০০ টাকা ছিল।

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৪:৫৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
৫৩১ বার পড়া হয়েছে

এত আমদানির পরও খুলনায় চালের বাজার অস্থির

আপডেট সময় ০৪:৫৩:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রতি সপ্তাহে চাল আমদানি হচ্ছে। সরকার আরও ৫০ হাজার মেট্রিকটন চাল কেনার প্রস্তুতি নিয়েছে। নওয়াপাড়া ও খুলনার বেসরকারি গুদামগুলোতে মজুদ অনেক বেশি। সরকারি গুদামে জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে। আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বোরো চাল বাজারে উঠতে শুরু করবে। তবে এত আমদানির পরও খুলনায় চালের বাজার অস্থির। সর্বনিম্ন প্রতিকেজির মূল্য ৫১ টাকা, সর্বোচ্চ ৯৮ টাকা।

জেলা খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত থেকে ৫৫ হাজার মেট্রিকটন ননবাসমতি চাল আসে। মিয়ানমার থেকেও কিছু সিদ্ধ চাল এসেছে। মার্চ মাসে এ পর্যন্ত ৪২ হাজার মেট্রিকটন চাল নিয়ে ৯টি জাহাজ মোংলা বন্দরে নোঙর করেছে। আর্জেন্টিনা থেকে এসেছে ১৯ হাজার ৭০০ মেট্রিকটন গম। এছাড়া চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, যশোরের বেনাপোল এবং সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে ৮৮ হাজার মেট্রিকটন চাল এসেছে।

এ অঞ্চলের আমদানিকারকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো খুলনার বটিয়াঘাটার আর এল ইন্টারন্যাশনাল, খুলনা নগরীর কে এন ট্রেডার্স, পলি এন্টারপ্রাইজ, বাগেরহাটের ফকিরহাটের জয় ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, সাতক্ষীরার কলারোয়ার পলাশ এন্টারপ্রাইজ, মুকুল এন্টারপ্রাইজ, যশোরের ঝিকরগাছার ইসমাইল হোসেন মিরন, নাভারনের ইসলামপুর রাইস মিল, অভয়নগরের জাহাঙ্গীর হোসেন, শার্শার সরদার অ্যালুমিনিয়াম স্টোর, নাভারনের মৌসুমি ট্রেডার্স, ঝিকরগাছার ইমু, রেজাউল অ্যান্ড সন্স, বাগআঁচড়ার আব্দুল খালেক ও যশোর পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের রুশ ইন্টারন্যাশনাল।

খুলনা বিভাগের চালাচল ও সংরক্ষক নিয়ন্ত্রক (খাদ্য) মশিউর রহমান জানিয়েছেন, চালের কোনো ঘাটতি নেই। সরকার এ মাসে আরও ৫০ হাজার মেট্রিকটন চাল কিনছে। দক্ষিণ জনপদের মানুষের কাছে আতপ চালের চাহিদা কম থাকায় পাকিস্তানি চাল মোংলা বন্দরে আসছে না। সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। তাই দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।

খুলনার বড় বাজারের ব্যবসায়ী পিকে ট্রেডার্সের মালিক জানিয়েছেন, স্থানীয় বাজারে ভারতীয় চালের চাহিদা বেড়েছে। খুলনা অঞ্চলের রাইস মিলগুলোতে ধানের সংকট থাকায় চাহিদা অনুযায়ী চাল পাওয়া যাচ্ছে না। মিনিকেট প্রতি কেজি ৬১ টাকার পরিবর্তে ৬৪ টাকা, বাসমতি ৬৬ টাকার পরিবর্তে ৭০ টাকা, নাজিরশাইল ৫৮ টাকার পরিবর্তে ৬১ টাকা, বালাম ৫১ টাকার পরিবর্তে ৬৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

শাহাজাহান ভাণ্ডারের ম্যানেজার গৌতম বিশ্বাস জানিয়েছেন, মোটা হিরা ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৪৮ টাকা এবং রত্না বালাম ৫৮ টাকার পরিবর্তে ৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় মহামায়া, আর এস গোল্ড ও রত্না আয়াজ ৩৬ জাতের চালের চাহিদা বেশি বলে জানান তিনি।

খুলনার সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তৈয়বুর রহমান জানিয়েছেন, খুলনার দুটি কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামে ৪৭ হাজার টন চাল মজুদ রয়েছে।

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি, কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান জানিয়েছেন, স্থানীয় হাটগুলোতে মিনিকেট ধান নেই, তাই রাইস মিলগুলো যথারীতি চাল সরবরাহ করতে পারছে না।

স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, প্রতি মণ ধান এখন ১,৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা বোরো মৌসুমের শুরুতে ১,১০০ টাকা ছিল।