ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলা, পুলিশসহ আহত ৫

সুকমল চন্দ্র বর্মন, কালাই, জয়পুরহাট::

ছবি: চেকপোস্ট

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ মোট ৫ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে, যখন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থর নেতৃত্বে বিএনপি কর্মীরা থানায় হামলা চালান। পুলিশ ও থানা সূত্রে জানা যায়, তারা থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা তিন আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য থানায় আক্রমণ করে। দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ সদস্য তাদের বাধা দিলে, তাদের মারপিট করে আহত করা হয় এবং থানা অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করলে, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এই ঘটনায় আহতদের মধ্যে স্থানীয় তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), আমিরুল ইসলাম (২৭), বগুড়ার শাহজাহানপুরের রফিক (৩৭), আব্দুল মমিন (৩৮) এবং দুই পুলিশ সদস্য কাজী জাফর ও সুমন রয়েছেন। সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকও আহত হন।

আহত রফিক সাংবাদিকদের জানান, শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জমি রেজিস্ট্রির জন্য উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যান, যেখানে পৌর বিএনপির ৯নং ওয়ার্ডের সভাপতি কবির চৌধুরী ও তার সঙ্গীরা ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তারা বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থকে জানায়। পার্থ উপস্থিত হয়ে চাঁদা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। বাধা দিতে গেলে, তোফাজ্জলসহ তার চার আত্মীয়কে মারধর করা হয় এবং রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এপরে, থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে শতাধিক লোক থানায় আক্রমণ করে। এ সময় পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করলে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং তিনজনকে আটক করে।

এই ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখা এবং কালাই থানা পুলিশের শতাধিক সদস্য ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, “যে কেউ অপরাধ করবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৩:১১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
৫১৯ বার পড়া হয়েছে

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলা, পুলিশসহ আহত ৫

আপডেট সময় ০৩:১১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ মোট ৫ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে, যখন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থর নেতৃত্বে বিএনপি কর্মীরা থানায় হামলা চালান। পুলিশ ও থানা সূত্রে জানা যায়, তারা থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা তিন আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য থানায় আক্রমণ করে। দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ সদস্য তাদের বাধা দিলে, তাদের মারপিট করে আহত করা হয় এবং থানা অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করলে, সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এই ঘটনায় আহতদের মধ্যে স্থানীয় তোফাজ্জল হোসেন (৩৫), আমিরুল ইসলাম (২৭), বগুড়ার শাহজাহানপুরের রফিক (৩৭), আব্দুল মমিন (৩৮) এবং দুই পুলিশ সদস্য কাজী জাফর ও সুমন রয়েছেন। সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকও আহত হন।

আহত রফিক সাংবাদিকদের জানান, শাখারুঞ্জ গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জমি রেজিস্ট্রির জন্য উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যান, যেখানে পৌর বিএনপির ৯নং ওয়ার্ডের সভাপতি কবির চৌধুরী ও তার সঙ্গীরা ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তারা বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী আশিক পার্থকে জানায়। পার্থ উপস্থিত হয়ে চাঁদা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়। বাধা দিতে গেলে, তোফাজ্জলসহ তার চার আত্মীয়কে মারধর করা হয় এবং রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এপরে, থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বে শতাধিক লোক থানায় আক্রমণ করে। এ সময় পুলিশ বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তা কামনা করলে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং তিনজনকে আটক করে।

এই ঘটনার পর জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স, জেলা গোয়েন্দা শাখা এবং কালাই থানা পুলিশের শতাধিক সদস্য ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান বলেন, “যে কেউ অপরাধ করবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।