ইসলাম ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য রুয়েট ছাত্রের
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ওয়াকার কামাল অতুল নামে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে সমালোচনা ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ১৩ই মার্চ, অতুল তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট শেয়ার করেন, যেখানে তিনি হজকে পূজার সঙ্গে তুলনা করে এবং কাবা শরীফকে অবমাননা করেন। পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেন, “একুশে ফেব্রুয়ারিতে ফুল দিয়ে খাম্বা পূজা করা হারাম, কিন্তু সেই খাম্বা cubic হলে সেটার পূজা করা আরাম।” তার এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অতুলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কম্পিউটার সাইন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আফিফ রহমান ফেসবুকে লেখেন, “সারকাজম করতে করতে আমরা রুয়েটিয়ানরা মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছি না?? বাকস্বাধীনতা আছে বলেই যা ইচ্ছে তাই বলতে পারি?? নিদিষ্ট কোন ব্যক্তি নিয়ে মজা করতে গিয়ে পবিত্র ‘কাবা ঘর’কে – cubic খাম্বা এবং ‘হজ্জ’ করাকে – পুজা করার সাথে তুলনা করা কোন পর্যায়ের অসুস্থ মস্তিষ্কের উদাহরণ..!!!”
যন্ত্রকৌশল ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিক মন্তব্য করেন, “দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ যেন দ্বিতীয়বার আর কেউ সুযোগ না পায়।” একইভাবে, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের রাকিব রহমান তার পোস্টে লেখেন, “ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং কাবা ঘর ও হজ্ব সম্পর্কে কটূক্তি করায় উপযুক্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিমুল হাসান জানান, “আর্কিটেকচার ২০ এর অতুল আমাদের পবিত্র কাবাশরিফ নিয়ে যেভাবে কটূক্তি করেছে এটা কখনোই কাম্য নয়! এই ইসলাম অবমাননার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি!”
এদিকে, ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর মো. রবিউল ইসলাম সরকার এই ঘটনার ব্যাপারে মন্তব্য করে বলেন, “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা রাষ্ট্রীয় অপরাধ, সে খুব খারাপ কাজ করেছে। এমন কর্মকাণ্ড সমাজের শান্তি বিনষ্ট করার আশঙ্কা সৃষ্টি করে।”
এ ঘটনায় অতুলের সহপাঠীরা তার ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন এবং ফৌজদারি অপরাধের দায়ে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠার পাশাপাশি অনেকেই তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার ঘটনা পুনরায় না ঘটে।