ঢাকা ০৮:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রামপালের বাঁশতলীতে ঘের দখলবাজেরা বেপরোয়া, অভিযোগের প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা

হারুন শেখ, বাগেরহাট প্রতিনিধি::

ছবি: চেকেপাস্ট

জুলাই বিপ্লবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে বাগেরহাটের রামপালে মৎস্য ঘের দখলবাজরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক মৎস্য ঘের দখলের ঘটনা ঘটলেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। এ এলাকার প্রধান অর্থকারী খাত মৎস্য চাষ হওয়ায় কতিপয় সন্ত্রাসী ঘের দখলবাজেরা সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে দখলের মহোৎসব চালাচ্ছে।

বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করার পর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়নের সর্বত্র কথিত রাজনৈতিক দলের নেতার মুখোশ পরে একদল ব্যক্তি ঘের দখল, বাড়ি দখল, রাস্তাঘাট দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। তারা কোনো আইনকানুন মানে না, বরং নিজেরাই আইন তৈরি করে নিয়েছে। প্রশাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তাদের থামানোর কেউ নেই।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাঁশতলী গ্রামের মৃত রুস্তুম সরদারের ছেলে সরদার শরিফুল ইসলাম মুক্ত, গিলাতলা গ্রামের মৃত মতলেব শেখের ছেলে শেখ ইস্রাফিল, একই গ্রামের মৃত শিকদার হাকিমের ছেলে ও আবুল কালাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শিকদার ফিরোজ, মৃত সরোয়ার তালুকদারের ছেলে তালুকদার মনিরুল, বাঁশতলীর মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে শেখ তুহিন, মৃত রুস্তুম মল্লিকের ছেলে মল্লিক সোহেল, মৃত সাজউদ্দিনের ছেলে সরদার ফিরোজসহ অজ্ঞাত ৪০-৫০ জন একটি দখলদারি কমিটি গঠন করে জলাভূমি, খাল-নালা দখল করছে।

ভুক্তভোগী শেখ আল মামুন জানান, “আমার বৈধ ৩টি ঘের তারা দখল করে নিয়েছে। মিছিল করে বাগদা চিংড়ীর পোনা ছেড়েছে। বাঁশতলীর বনিবান্দা ঘের, নড়খালকুল ঘের, আইরোখোলা ঘের দখল করেছে। মালামাল লুট ও বাসা ভাঙচুর করে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করেছে। তাদের সাথে কথা বললে তারা মারপিট করে এবং খুন করার হুমকি দেয়। পুরো বাঁশতলী গ্রামের মানুষ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।”

এ প্রসঙ্গে মুক্ত সরদার ও শিকদার ফিরোজের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, “আমরাও জমির মালিকদের কাছ থেকে হারির টাকা দিয়ে জমি রেখেছি। মামুনও জমি রেখেছে। এখানে কোনো ঘের দখল করা হয়নি।” তারা সকলেই মৎস্য ঘের দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে রামপাল থানার ওসি মো. সেলিম রেজার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাঁশতলী এলাকায় ঘের দখল সংক্রান্ত একাধিক লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্তদের ডেকে বিষয়গুলোর মীমাংসা করা হবে। তবে যারা এখনো জোরপূর্বক ঘের দখল করে রেখেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৯:০৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
৫১৭ বার পড়া হয়েছে

রামপালের বাঁশতলীতে ঘের দখলবাজেরা বেপরোয়া, অভিযোগের প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা

আপডেট সময় ০৯:০৪:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

জুলাই বিপ্লবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে বাগেরহাটের রামপালে মৎস্য ঘের দখলবাজরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক মৎস্য ঘের দখলের ঘটনা ঘটলেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। এ এলাকার প্রধান অর্থকারী খাত মৎস্য চাষ হওয়ায় কতিপয় সন্ত্রাসী ঘের দখলবাজেরা সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে দখলের মহোৎসব চালাচ্ছে।

বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করার পর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়নের সর্বত্র কথিত রাজনৈতিক দলের নেতার মুখোশ পরে একদল ব্যক্তি ঘের দখল, বাড়ি দখল, রাস্তাঘাট দখল, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। তারা কোনো আইনকানুন মানে না, বরং নিজেরাই আইন তৈরি করে নিয়েছে। প্রশাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তাদের থামানোর কেউ নেই।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাঁশতলী গ্রামের মৃত রুস্তুম সরদারের ছেলে সরদার শরিফুল ইসলাম মুক্ত, গিলাতলা গ্রামের মৃত মতলেব শেখের ছেলে শেখ ইস্রাফিল, একই গ্রামের মৃত শিকদার হাকিমের ছেলে ও আবুল কালাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শিকদার ফিরোজ, মৃত সরোয়ার তালুকদারের ছেলে তালুকদার মনিরুল, বাঁশতলীর মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে শেখ তুহিন, মৃত রুস্তুম মল্লিকের ছেলে মল্লিক সোহেল, মৃত সাজউদ্দিনের ছেলে সরদার ফিরোজসহ অজ্ঞাত ৪০-৫০ জন একটি দখলদারি কমিটি গঠন করে জলাভূমি, খাল-নালা দখল করছে।

ভুক্তভোগী শেখ আল মামুন জানান, “আমার বৈধ ৩টি ঘের তারা দখল করে নিয়েছে। মিছিল করে বাগদা চিংড়ীর পোনা ছেড়েছে। বাঁশতলীর বনিবান্দা ঘের, নড়খালকুল ঘের, আইরোখোলা ঘের দখল করেছে। মালামাল লুট ও বাসা ভাঙচুর করে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করেছে। তাদের সাথে কথা বললে তারা মারপিট করে এবং খুন করার হুমকি দেয়। পুরো বাঁশতলী গ্রামের মানুষ তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। থানায় অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না।”

এ প্রসঙ্গে মুক্ত সরদার ও শিকদার ফিরোজের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, “আমরাও জমির মালিকদের কাছ থেকে হারির টাকা দিয়ে জমি রেখেছি। মামুনও জমি রেখেছে। এখানে কোনো ঘের দখল করা হয়নি।” তারা সকলেই মৎস্য ঘের দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে রামপাল থানার ওসি মো. সেলিম রেজার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বাঁশতলী এলাকায় ঘের দখল সংক্রান্ত একাধিক লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্তদের ডেকে বিষয়গুলোর মীমাংসা করা হবে। তবে যারা এখনো জোরপূর্বক ঘের দখল করে রেখেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”