ঢাকা ০২:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাগেরহাটের রামপালে আধিপত্য বিস্তারে বিএনপি সমর্থিত দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত -১৬

হারুন শেখ, বাগেরহাট প্রতিনিধি::

ছবি: চেকপোস্ট

বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার ঝনঝনিয়া চেয়ারম্যান মোড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে সংঘটিত এই সংঘর্ষে বিএনপি সমর্থিত দুই গ্রুপ পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেয়, যার ফলে ১৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝনঝনিয়া চেয়ারম্যান মোড়ে একটি মৎস্য আড়ৎ ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল। আ. রাজ্জাকের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক শেখের সঙ্গে আরজ আলী ও তার ভাই মহিদ শেখের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টায় মৎস্য আড়তের সামনে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এতে স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত লোকজনও জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে লোহার রড, হাতুড়ি, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহৃত হয়, যা ১৬ জনকে গুরুতর আহত করে।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন, আল আমিন (৪০), আজমল শেখ (৪৩), শহিদ ব্যাপারী (৩৬), আবুল কালাম (৪০), বাবুল শেখ (৩৫), শামীম শেখ (২২), আহম্মদ আলী (৪২), ইসমাইল শেখ (৩৫), আশরাফ আলী (৫৫), তাহিদুল ইসলাম (৪০), হোসাইন শেখ (১৮), তারেক শেখ (৩৫), ফারুক হোসেন (৫৫), আবুল কালাম (৩০), মাহিদ শেখ (৫০)।

বাকি আহতদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। গুরুতর আহত ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

রামপাল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বলেন, “আমাদের লোকজনের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। ১০-১২ জনকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি-রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আমাদের ৭ জনকে খুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমাদের বাড়িঘরেও হামলা চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে।”

অন্যদিকে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, “আমি শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু ভাগার আকো সমস্যা সৃষ্টি করছে। সে তার লোকজন নিয়ে রামপাল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারির পিতার দোকান ভাঙচুর করেছে এবং তার পিতাকে মারধর করেছে।”

রামপাল থানার ওসি মো. সেলিম রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

এই সংঘর্ষের ঘটনায় ঝনঝনিয়া, চেয়ারম্যান মোড়, ভাগা ও রনসেন এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে পরবর্তী কোনো সংঘর্ষ না ঘটে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৯:০০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
৫১৮ বার পড়া হয়েছে

বাগেরহাটের রামপালে আধিপত্য বিস্তারে বিএনপি সমর্থিত দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত -১৬

আপডেট সময় ০৯:০০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার ঝনঝনিয়া চেয়ারম্যান মোড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে সংঘটিত এই সংঘর্ষে বিএনপি সমর্থিত দুই গ্রুপ পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেয়, যার ফলে ১৬ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঝনঝনিয়া চেয়ারম্যান মোড়ে একটি মৎস্য আড়ৎ ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল। আ. রাজ্জাকের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক শেখের সঙ্গে আরজ আলী ও তার ভাই মহিদ শেখের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টায় মৎস্য আড়তের সামনে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এতে স্থানীয় বিএনপি সমর্থিত লোকজনও জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে লোহার রড, হাতুড়ি, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহৃত হয়, যা ১৬ জনকে গুরুতর আহত করে।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন, আল আমিন (৪০), আজমল শেখ (৪৩), শহিদ ব্যাপারী (৩৬), আবুল কালাম (৪০), বাবুল শেখ (৩৫), শামীম শেখ (২২), আহম্মদ আলী (৪২), ইসমাইল শেখ (৩৫), আশরাফ আলী (৫৫), তাহিদুল ইসলাম (৪০), হোসাইন শেখ (১৮), তারেক শেখ (৩৫), ফারুক হোসেন (৫৫), আবুল কালাম (৩০), মাহিদ শেখ (৫০)।

বাকি আহতদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। গুরুতর আহত ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

রামপাল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বলেন, “আমাদের লোকজনের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। ১০-১২ জনকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি-রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আমাদের ৭ জনকে খুমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমাদের বাড়িঘরেও হামলা চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে।”

অন্যদিকে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, “আমি শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছি। কিন্তু ভাগার আকো সমস্যা সৃষ্টি করছে। সে তার লোকজন নিয়ে রামপাল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারির পিতার দোকান ভাঙচুর করেছে এবং তার পিতাকে মারধর করেছে।”

রামপাল থানার ওসি মো. সেলিম রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। বর্তমানে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

এই সংঘর্ষের ঘটনায় ঝনঝনিয়া, চেয়ারম্যান মোড়, ভাগা ও রনসেন এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে, যাতে পরবর্তী কোনো সংঘর্ষ না ঘটে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।