বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশন’ জয়পুরহাট শাখার চার দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশনের ব্যানারে জয়পুরহাটে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিশ্রুতির নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও ম্যাটস কোর্স কারিকুলামের চার দফা দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। পাশাপাশি, গ্রাজুয়েট চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের দ্বারা ম্যাটস কোর্স সম্পর্কে মিথ্যাচার ও কটূক্তি এবং বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদ জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশন’ জয়পুরহাট শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, ‘অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ এবং কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নতুন পদ সৃষ্টি করতে হবে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠান ও কোর্সের নাম পরিবর্তন, অসংগতিপূর্ণ কারিকুলাম সংশোধন, ইন্টার্নশিপে লগবুক প্রণয়ন এবং বিএমএন্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার অধিকার প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি, প্রস্তাবিত এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ডের খসড়া আইনের নাম পরিবর্তন করে “মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ” নামকরণ করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মো. আব্দুল হাকিম, উপদেষ্টা মো. আব্দুল হালিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান মুন্না, দপ্তর সম্পাদক রাসেল মাহমুদ প্রমুখ।
মো. মাহমুদুল হাসান আরও জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৬টি সরকারি ম্যাটস ও প্রায় ২০০টি বেসরকারি ম্যাটস এই কোর্স পরিচালনা করছে। ডিএমএফ ডিগ্রিধারীরা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় “উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার” পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান ২০২২ এবং বিএমএন্ডডিসির সর্বশেষ তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রায় ৬০ হাজার ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষার্থী রয়েছেন এবং নিবন্ধিত ডিএমএফ সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৫ হাজার ৫০০ জন ডিপ্লোমা চিকিৎসক ‘উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার’ পদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসহ জেলা সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন। তবে বর্তমানে ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ হাজার জনবল কর্মসংস্থানহীন অবস্থায় রয়েছে।
বক্তারা জানান, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও ম্যাটস শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেও তাদের ন্যায্য দাবি পূরণ হয়নি। শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও গত এক যুগ ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রায় ২ হাজার এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে প্রায় ১ হাজার শূন্য পদের অনুমোদন থাকলেও নিয়োগ নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা দ্রুত তাদের চার দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।