ঢাকা ০২:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপজেলা জুড়ে চলছে বালু, মাটি কাটা ও সরকারি খাল দখলের মহোৎসব, যেন দেখার কেউ নেই

এম এ ওয়াহেদ, লাখাই, হবিগঞ্জ::

ছবি: চেকপোস্ট

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলায় দেদারসে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন ও ফসলি জমির টপ সয়েল কর্তনের মহোৎসব চলছে, অথচ দেখার কেউ নেই। ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ইউনিয়নের ফসলি জমি থেকে এক্সকাভেটর দ্বারা টপ সয়েল কেটে নেওয়া হচ্ছে। এসব মাটি অবৈধ ট্রাক্টর দিয়ে বহন করে গ্রামের রাস্তাঘাট বিনষ্ট করা হচ্ছে, ফলে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।

এলাকার সচেতন মহল, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি দেখেও কোনো কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছেন না। সরেজমিনে কাঠিহারা গ্রামের দক্ষিণ দিকে দয়া নন্দ আশ্রম সংলগ্ন হাওরে এক্সকাভেটর দিয়ে জমির টপ সয়েল কর্তন করতে দেখা গেছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নের ফসলি জমি থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, যা কৃষি জমির জন্য ভয়াবহ হুমকি স্বরূপ।

বিভিন্ন সময়ে উপজেলা প্রশাসন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জানলেও জোরালো ব্যবস্থা না নেওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে উপজেলার বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তির সাথে আলাপ করলে তারা জানান, প্রশাসনের নীরব ভূমিকাই মাটি ও বালু ব্যবসায়ীদের বেপরোয়া করে তুলেছে। তারা আরও বলেন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বালু মহাল ও ফসলি জমির টপ সয়েল কর্তনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো এই অনিয়ম রোধ করা সম্ভব হবে, অন্যথায় এ কার্যক্রম দিন দিন বাড়তেই থাকবে।

এছাড়া উপজেলা জুড়ে সরকারি খালও অবৈধভাবে দখল করা হচ্ছে। কিছু ব্যক্তি তাদের নিজস্ব জমির সাথে মিশিয়ে সরকারি খাল দখল করে রেখেছেন। সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ সুলতানার দায়িত্বকালে স্থানীয় বুল্লা বাজারে ৪৬ জন অবৈধ দখলদারের তালিকা প্রণয়ন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উচ্ছেদ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনি আশ্বাস দেন যে, হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর যদি কঠোর ভূমিকা নেয়, তাহলে অবৈধ মাটি ও বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে সরকারি খাল দখল এবং অবৈধ বালু ও মাটি কাটার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:২৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
৫৩৫ বার পড়া হয়েছে

উপজেলা জুড়ে চলছে বালু, মাটি কাটা ও সরকারি খাল দখলের মহোৎসব, যেন দেখার কেউ নেই

আপডেট সময় ১০:২৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলায় দেদারসে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন ও ফসলি জমির টপ সয়েল কর্তনের মহোৎসব চলছে, অথচ দেখার কেউ নেই। ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ইউনিয়নের ফসলি জমি থেকে এক্সকাভেটর দ্বারা টপ সয়েল কেটে নেওয়া হচ্ছে। এসব মাটি অবৈধ ট্রাক্টর দিয়ে বহন করে গ্রামের রাস্তাঘাট বিনষ্ট করা হচ্ছে, ফলে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।

এলাকার সচেতন মহল, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি দেখেও কোনো কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছেন না। সরেজমিনে কাঠিহারা গ্রামের দক্ষিণ দিকে দয়া নন্দ আশ্রম সংলগ্ন হাওরে এক্সকাভেটর দিয়ে জমির টপ সয়েল কর্তন করতে দেখা গেছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নের ফসলি জমি থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, যা কৃষি জমির জন্য ভয়াবহ হুমকি স্বরূপ।

বিভিন্ন সময়ে উপজেলা প্রশাসন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জানলেও জোরালো ব্যবস্থা না নেওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এ বিষয়ে উপজেলার বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তির সাথে আলাপ করলে তারা জানান, প্রশাসনের নীরব ভূমিকাই মাটি ও বালু ব্যবসায়ীদের বেপরোয়া করে তুলেছে। তারা আরও বলেন, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বালু মহাল ও ফসলি জমির টপ সয়েল কর্তনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো এই অনিয়ম রোধ করা সম্ভব হবে, অন্যথায় এ কার্যক্রম দিন দিন বাড়তেই থাকবে।

এছাড়া উপজেলা জুড়ে সরকারি খালও অবৈধভাবে দখল করা হচ্ছে। কিছু ব্যক্তি তাদের নিজস্ব জমির সাথে মিশিয়ে সরকারি খাল দখল করে রেখেছেন। সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ সুলতানার দায়িত্বকালে স্থানীয় বুল্লা বাজারে ৪৬ জন অবৈধ দখলদারের তালিকা প্রণয়ন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো উচ্ছেদ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে তিনি আশ্বাস দেন যে, হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর যদি কঠোর ভূমিকা নেয়, তাহলে অবৈধ মাটি ও বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে সরকারি খাল দখল এবং অবৈধ বালু ও মাটি কাটার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464