স্থানীয় জনগণের প্রতিবাদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাস
ফুলতলা উপজেলা পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর সেলিম রেজার বিরুদ্ধে দুর্নীতির পাহাড়
খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলা পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর বি এম সেলিম রেজার বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তৃতীয় শ্রেণীর এই সরকারি কর্মচারী অল্প সময়ের মধ্যেই অবৈধভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। সাধারণ মানুষের দাবি, তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে ফুলে ফেঁপে উঠেছেন।
অল্প সময়েই বিপুল সম্পদের মালিক:
সেলিম রেজা ২০১২ সালে ফুলতলা উপজেলা পরিষদে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে যোগদান করেন। এরপর বিভিন্ন কৌশলে সম্পদ অর্জন করতে থাকেন। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে- ২০১৯ সালে ফুলতলা দামোদর ৮ নং ওয়ার্ডে ৫৬ লক্ষ টাকায় জায়গাসহ বাড়ি ক্রয়, ২০২১ সালে খুলনার ডাকাতিয়া বিলে ২০ লক্ষ টাকার জমি মাত্র ৮ লাখ টাকায় জবরদখল, ২০২৩ সালে ফুলতলা বাজার সংলগ্ন মিশ্রি দেওয়ান শাহ রোডে ৪৫ লক্ষ টাকায় দুটি দোকান ক্রয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৭,৮৬,১৩০ টাকা আত্মসাৎ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দুর্যোগ সহনীয় গৃহ বরাদ্দ প্রকল্পের একটি ঘর অসহায়দের বদলে নিজের শাশুড়ির নামে বরাদ্দ।
গৃহহীনদের ঘর না দেওয়ার অভিযোগ:
ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোছাঃ রিক্তা বেগম অভিযোগ করেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আবাসন প্রকল্পে তিনজন হতদরিদ্র গৃহহীন ব্যক্তি (কোকিলা বেগম, কাজল খাতুন ও হাবিবুর রহমান) ঘর পাওয়ার কথা থাকলেও সেলিম রেজা ঘর বরাদ্দ না দিয়ে অর্থ দাবি করেন। গরিব মানুষরা ঘুষ দিতে না পারায় তারা ঘর থেকে বঞ্চিত হন।
তিনি আরও জানান, ২০২০ সালে ডিপ টিউবওয়েল বরাদ্দের জন্য সেলিম রেজা তার কাছ থেকে ৮,০০০ টাকা নিলেও আজও সেটি প্রদান করা হয়নি।
সেলিম রেজার বিরুদ্ধে ফুলতলা উপজেলার সাধারণ মানুষ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় পত্রিকা “দৈনিক ফুলতলা প্রতিদিন” প্রয়োজনীয় নথি ও প্রমাণসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। ইউএনও সেলিম রেজার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
ফুলতলা উপজেলার জনগণ এই দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর শাস্তি এবং দুর্নীতিগ্রস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানিয়েছে। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে কিনা, তা এখন দেখার বিষয়।