ঢাকা ০৫:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফলতা পেয়েছে বীরগঞ্জের কৃষকরা

প্রসেনজিৎ চন্দ্র শর্মা ,দিনাজপুর ::

পরীক্ষামূলকভাবে রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জের কৃষকরা। ভালো ফলনের পাশাপাশি বাজারে ভালো দামও পাচ্ছেন তারা। ফলে রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় সবজি চাষিরা।

রঙিন ফুলকপির সাফল্যে খুশি স্থানীয় কৃষি বিভাগও। উপজেলার নিজপাড়া, ভোগনগর ও সাতোর ইউনিয়নের রঙিন ফুলকপি চাষিরা বলছেন, সাদা কপি যেখানে ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেখানে এই কপি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু হয়েছে। উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাইক্ষেত্র গ্রামের সবজি চাষি কুশল চন্দ্র রায় ২০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এই ফুলকপি চাষ করেন।

শনিবার দুপুরে ওই গ্রামে খেত ঘুরে দেখা যায়, হলুদ, গোলাপি ও হালকা লাল রঙের বাহারি ফুলকপি জমির প্রতিটি কোণে শোভা পাচ্ছে। এটি শুধু জমির সৌন্দর্য বাড়ায়নি, বরং বাজারেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন কুশল চন্দ্র রায়। চারা, জৈব সার, কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। উৎপাদন খরচ কৃষি অফিস বহন করলেও বাজারের বিপুল চাহিদা কুশল চন্দ্র রায় ও অন্যান্য কৃষকদের সাফল্যের স্বাদ এনে দিয়েছে।

সাদা ফুলকপি যেখানে ৪-৫ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে রঙিন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। ইতোমধ্যেই ৭ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন কুশল, এবং আশা করছেন বাকি ফসল থেকে আরও ৪৫-৫০ হাজার টাকা আয় হবে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।

কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী কুশল চন্দ্র রায় জৈব পদ্ধতিতে চাষ করেছেন এই রঙিন ফুলকপি। পোকামাকড় দমনের জন্য ব্যবহার করেছেন হলুদ ফাঁদ, যা কপিগুলোকে স্বাস্থ্যকর এবং বিষমুক্ত করেছে। বাজারে আসতেই রঙিন ফুলকপির ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে।

বীরগঞ্জ পৌর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. মোজাম্মেল জানান, রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ অনেক ভালো, এবং এটি বাজারে আসা মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা যদি এই চাষ বাড়ান, তবে এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল হয়ে উঠবে।

স্থানীয় ক্রেতা আশারুল জানান, ক্ষেত থেকে ২০ টাকা দরে রঙিন ফুলকপি কিনেছেন তিনি। দেখতে আকর্ষণীয়, খেতেও সুস্বাদু।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, পরীক্ষামূলক চাষে কৃষকরা আশানুরূপ ফলন ও বাজারমূল্য পেয়েছেন। রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ সাদা ফুলকপির তুলনায় অনেক বেশি এবং এতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তিনি আরও জানান, এ বছর উপজেলায় ৭০২ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়েছে, যার মধ্যে এক একর জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাজারে উচ্চ চাহিদা থাকায় আগামী বছর আরও বেশি কৃষক এই চাষে যুক্ত হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:৫০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
৫০৩ বার পড়া হয়েছে

রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফলতা পেয়েছে বীরগঞ্জের কৃষকরা

আপডেট সময় ১১:৫০:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পরীক্ষামূলকভাবে রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জের কৃষকরা। ভালো ফলনের পাশাপাশি বাজারে ভালো দামও পাচ্ছেন তারা। ফলে রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় সবজি চাষিরা।

রঙিন ফুলকপির সাফল্যে খুশি স্থানীয় কৃষি বিভাগও। উপজেলার নিজপাড়া, ভোগনগর ও সাতোর ইউনিয়নের রঙিন ফুলকপি চাষিরা বলছেন, সাদা কপি যেখানে ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, সেখানে এই কপি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে রঙিন ফুলকপি চাষ শুরু হয়েছে। উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাইক্ষেত্র গ্রামের সবজি চাষি কুশল চন্দ্র রায় ২০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এই ফুলকপি চাষ করেন।

শনিবার দুপুরে ওই গ্রামে খেত ঘুরে দেখা যায়, হলুদ, গোলাপি ও হালকা লাল রঙের বাহারি ফুলকপি জমির প্রতিটি কোণে শোভা পাচ্ছে। এটি শুধু জমির সৌন্দর্য বাড়ায়নি, বরং বাজারেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন কুশল চন্দ্র রায়। চারা, জৈব সার, কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছে উপজেলা কৃষি অফিস। উৎপাদন খরচ কৃষি অফিস বহন করলেও বাজারের বিপুল চাহিদা কুশল চন্দ্র রায় ও অন্যান্য কৃষকদের সাফল্যের স্বাদ এনে দিয়েছে।

সাদা ফুলকপি যেখানে ৪-৫ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে রঙিন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। ইতোমধ্যেই ৭ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন কুশল, এবং আশা করছেন বাকি ফসল থেকে আরও ৪৫-৫০ হাজার টাকা আয় হবে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।

কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী কুশল চন্দ্র রায় জৈব পদ্ধতিতে চাষ করেছেন এই রঙিন ফুলকপি। পোকামাকড় দমনের জন্য ব্যবহার করেছেন হলুদ ফাঁদ, যা কপিগুলোকে স্বাস্থ্যকর এবং বিষমুক্ত করেছে। বাজারে আসতেই রঙিন ফুলকপির ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে।

বীরগঞ্জ পৌর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. মোজাম্মেল জানান, রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ অনেক ভালো, এবং এটি বাজারে আসা মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা যদি এই চাষ বাড়ান, তবে এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল হয়ে উঠবে।

স্থানীয় ক্রেতা আশারুল জানান, ক্ষেত থেকে ২০ টাকা দরে রঙিন ফুলকপি কিনেছেন তিনি। দেখতে আকর্ষণীয়, খেতেও সুস্বাদু।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, পরীক্ষামূলক চাষে কৃষকরা আশানুরূপ ফলন ও বাজারমূল্য পেয়েছেন। রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ সাদা ফুলকপির তুলনায় অনেক বেশি এবং এতে উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তিনি আরও জানান, এ বছর উপজেলায় ৭০২ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষ হয়েছে, যার মধ্যে এক একর জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাজারে উচ্চ চাহিদা থাকায় আগামী বছর আরও বেশি কৃষক এই চাষে যুক্ত হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464