সৌন্দর্য কেবল বাহ্যিক নয়
সৌন্দর্য একটি প্যারামিটার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অনেক সময় আমরা শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্য দিয়ে মানুষকে বিচার করি। এই মানদণ্ডের কারণে কেউ কেউ অহংকারী হয়ে উঠেন, আবার অনেকে তাদের নিজেদের মূল্য খুঁজে না পেয়ে হতাশায় ভোগেন। বিশেষ করে নারীরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সৌন্দর্যের নিরীক্ষার সম্মুখীন হন।
বাহ্যিক সৌন্দর্য শুধুমাত্র চেহারা বা সাজসজ্জার বিষয় নয়, বরং এটি প্রকৃতির একটি দান। এটি আমাদের মনকে শান্তি দেয় এবং অনুভূতিগুলোকে সংবেদনশীল করে। একটি ফুল যেমন আমাদের জীবনে আনন্দ আনে, তেমনি সৌন্দর্যের গভীর প্রভাব রয়েছে জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও।
তবে, বর্তমান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা অনেকাংশে বদলে গেছে। সিনেমায় বয়সের পরিবর্তন দেখানোর জন্য মেকআপ বা প্রযুক্তির ব্যবহার সাধারণ ঘটনা। এর প্রতিফলন বাস্তব জীবনে এমনকি সম্পর্কগুলোতেও পড়ছে। বিবাহের ক্ষেত্রে মেকআপ দিয়ে বাস্তবতার থেকে ভিন্ন এক সৌন্দর্যের রূপ তৈরি করা হয়, যা পরবর্তীতে সাংসারিক জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বিখ্যাত অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট তার ৪০ বছর বয়সে একটি নতুন উপলব্ধি শেয়ার করেছিলেন। মেকআপহীন ছবির মাধ্যমে তিনি বলেছিলেন, “আমি আজ আমার আসল আমিটাকে আলিঙ্গন করতে চাই।” তার এই বার্তায় বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি সকলকে আহ্বান জানান, নিজেদের প্রকৃত রূপকে ভালোবাসতে এবং বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যে মনোযোগ দিতে।
সৌন্দর্য কেবল বাহ্যিক নয়, অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাহ্যিক সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য ত্বকের যত্ন, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পরিমিত সাজসজ্জা যেমন প্রয়োজন, তেমনি অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যের জন্য মানসিক প্রশান্তি, ইতিবাচক চিন্তা এবং নৈতিকতার চর্চা আবশ্যক।
সত্যিকারের সৌন্দর্য তখনই প্রকাশ পায়, যখন বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যের মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকে। নিজের প্রতি যত্নশীল থাকা এবং ইতিবাচক মানসিকতা ধারণ করাই সৌন্দর্যের প্রকৃত চাবিকাঠি। তাই, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য উভয়ের প্রতি যত্নবান হয়ে জীবনকে আরও সুন্দর ও প্রাণবন্ত করে তোলা উচিত।