আলুর কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় লোকসানে চিরিরবন্দরের চাষিরা
চিরিরবন্দরের আলুচাষিরা চলতি মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় বড় অঙ্কের লোকসানের মুখে পড়েছেন। গত বছরের তুলনায় এবার আলুর বাজারদর অর্ধেকে নেমে এসেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে ২৫-২৬ টাকা খরচ হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকায়, যা চাষিদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলার নান্দেড়াই এলাকার কৃষক সাজ্জাদ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে ৪ বিঘা জমিতে আলু চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৭৫-৮০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রতি কেজি আলু ১৮ টাকা দরে বিক্রি করে বিঘা প্রতি প্রায় ১৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।
অমরপুর ইউনিয়নের কৃষক শামসুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফা জানান, তড়িঘড়ি করে আলু তুলতে গিয়ে উৎপাদন কমে গেছে। তাছাড়া আলু তোলার জন্য দিনমজুরদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে।
সন্তোষপাড়া এলাকার মোকছেদ আলী জানান, ৫০ শতক জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ৮০-৮৫ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারদরে আলু বিক্রি করে তিনি উল্লেখযোগ্য লোকসানের মুখে পড়েছেন।
চাষিদের ভাষ্যমতে, বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় আলুর উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়েছে। অথচ বাজারে আলুর দাম কমে যাওয়ায় লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচও উঠছে না।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চিরিরবন্দরে ৩,১৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হলেও চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা বেড়ে ৩,২৮৫ হেক্টরে পৌঁছেছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় বাজারে আলুর দাম কমেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা শারমিন জানান, গত বছর আলুর দাম ভালো থাকায় এ বছর আবাদ বৃদ্ধি পায়। এতে বাজারে সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম কমে গেছে। তবে কৃষি অফিস থেকে চাষিদের অতিরিক্ত আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে ভালো দামে বিক্রি করা যায়।
চাষিরা দাবি করেছেন, ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। পাশাপাশি স্থানীয় হিমাগারের সেবা আরও সহজলভ্য করা হলে চাষিদের লোকসান কমবে।