বাগেরহাটে বিনামূল্যে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রক্তদান
বাগেরহাটে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে স্বেচ্ছায় রক্ত সংগ্রহ ও প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দিনব্যাপী এই আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয় জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে। গ্লোবাল ইয়ুথ হারমোনি ইনিশিয়েটিভ ও ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের যৌথ আয়োজনে জেলার ৪১টি রক্তদাতা সংগঠনের ২০০ জনেরও বেশি সদস্য এই মহৎ উদ্যোগে অংশগ্রহণ করেন।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু সীমার মা লাবনি বেগম বলেন, “আমার দুটি সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী ছিল। তাদের একজনকে আমরা হারিয়েছি। প্রতিমাসে রক্ত জোগার করা কতটা কষ্টের, তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। এই উদ্যোগ আমাদের জন্য স্বস্তির।”
একই অনুভূতি প্রকাশ করেন আরেক মা নাসিমা বেগম। তিনি বলেন, “রক্তের অভাবে অনেক সময় আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। এই আয়োজন আমাদের অনেক সাহায্য করেছে।”
শরণখোলা থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবী সাব্বির হোসেন বলেন, “প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে এসে রক্ত দিয়েছি। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সাহায্য করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে।”
রক্তদাতা সংগঠন আলোর পথের সাধারণ সম্পাদক আবুবকর সিদ্দিক জানান, “আজকের আয়োজনে অর্ধশতাধিক রোগীকে রক্ত দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট রক্তগুলো বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে সংরক্ষণ করা হবে।”
বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, “থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ। রোগীদের প্রতি দুই থেকে চার সপ্তাহে রক্ত দেওয়া প্রয়োজন। এই উদ্যোগ রোগীদের দুর্ভোগ কমাবে। আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ে না করার পরামর্শ দেন তিনি, যা এই রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।”
ডিস্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের সভাপতি বাবুল সরদার বলেন, “আমরা চাই এ ধরনের উদ্যোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক। রোগীদের রক্তের অভাবে আর যেন কষ্ট পেতে না হয়। ভবিষ্যতে এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।”
রক্তদানের পাশাপাশি শীতার্ত রোগীদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দার, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।