মাধবপুরে কোম্পানি ও ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরিত্যক্ত ভূমি আত্মসাতের অভিযোগ
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের মাধবপুরে একটি পরিত্যক্ত ভূমি আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে আকিজ গ্লাসকো কোম্পানি এবং স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, শচীন্দ্র গোস্বামী নামক এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত ভূমি ভুয়া ওয়ারিশ সেজে বাসুদেব গোস্বামী নামে এক ব্যক্তি স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তার সহায়তায় আকিজ গ্লাসকো কোম্পানির কাছে বিক্রি করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভুয়া ওয়ারিশান সনদ তৈরি করে ইউপি চেয়ারম্যান, সাব রেজিস্টার অফিস ও ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করে এই জালিয়াতির কাজটি করা হয়। এসব কর্মকাণ্ডে স্থানীয় জনগণের ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় আন্দিঊড়া ইউপির হাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনও বিষয়টি তদন্ত করছে। তবে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, শচীন্দ্র গোস্বামী, যিনি হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় ভারত চলে যান এবং কখনো ফিরে আসেননি, তার পরিত্যক্ত ভূমি বাসুদেব গোস্বামী নামক এক ভুয়া ওয়ারিশের মাধ্যমে হস্তান্তর করে বিক্রি করা হয়। ২০১৪ সালে, আন্দিঊড়া ইউপির চেয়ারম্যান শামসু মিয়ার মাধ্যমে শচীন্দ্র গোস্বামীর পুত্র কানাই লাল গোস্বামী ও বাসুদেব গোস্বামীকে নিয়ে একটি মিথ্যা ওয়ারিশান সনদ তৈরি করা হয়। পরে, এই সনদের মাধ্যমে জমি বিক্রি করা হয় আকিজ গ্লাসকো কোম্পানির কাছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম দাবি করেছেন, বাসুদেব গোস্বামী আসলে কোনো বৈধ ওয়ারিশ নয়। তিনি জানান, দলিল, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করলে বাসুদেবের প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত করা যাবে। তিনি আরো জানান, মাধবপুরের সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল নং ৬২৩১/২০১৩ অনুযায়ী, গোলাম মস্তোফা চৌধুরী লিটন নামে এক ভূমি কর্মকর্তা জমিটি সাব কবলা রেজিস্ট্রি করেন এবং পরে আকিজ গ্লাসকো কোম্পানির কাছে জমি বিক্রি করা হয়।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা ফুল মিয়া, যিনি ৯ শতক ভূমির মালিক, দাবি করেছেন যে, তিনি এর বিরুদ্ধে থানায় এবং আদালতে মামলা করেছেন, কিন্তু কোম্পানির লোকজন তাকে তার জমিতে প্রবেশ করতে দেয় না।
এ ঘটনায় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ পরিত্যক্ত সম্পত্তি (নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা ও নিষ্পত্তি) আদেশ অনুযায়ী, পরিত্যক্ত ভূমি দখল আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।