চাঁপাইনবাবগঞ্জে ওসি রইস উদ্দীনের ব্যতিক্রমী সেবামূলক উদ্যোগ
বাংলাদেশের পুলিশ ব্যবস্থা সাধারণত নিয়মিত প্রশাসনিক ধারা অনুসরণ করে, যেখানে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)-এর কক্ষে প্রবেশ করতে সাধারণত অনুমতি লাগে। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় এই নিয়মের বাইরে গিয়ে ব্যতিক্রমী এক চিত্র দেখা যাচ্ছে। এখানে সাধারণ মানুষ সরাসরি ওসি রইস উদ্দীনের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন, অভিযোগ জানাতে পারছেন এবং আইনি সহায়তা পাচ্ছেন।
১২ নভেম্বর ২০২৪ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় যোগদান করেন মো. রইস উদ্দীন। যোগদানের পর থেকেই থানায় জনগণের সেবা বৃদ্ধির জন্য নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। ওসি রইস উদ্দীনের সেবামূলক উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এলাকার সিসি ক্যামেরা কার্যক্রমের মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো এবং এলাকায় বসবাসকারী মানুষের বিভিন্ন অভিযোগ দ্রুত সমাধান করা।
শাহানাজ বেগম, যিনি সদর মডেল থানায় আইনি সেবা নিতে এসেছিলেন, তিনি বলেন, “ওসি’র রুমে ঢুকে তার সঙ্গে কথা বলেছি। উনি খুব বিনয়ী এবং আন্তরিক। উনাকে স্যার বললে তিনি নিজেই বললেন, ‘স্যার নয় ভাই ডাকুন’। এমন এক পরিবেশ পাওয়া সত্যিই ভালো লাগছে।”
অন্যদিকে সদর উপজেলার শাজাহানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সুমন বলেন, “ওসি নিজে আমাকে কক্ষে ডেকে নিয়ে কথা বললেন এবং জিডি করতে সহায়তা করলেন। এমন অফিসারই আমাদের দরকার। আমি সত্যিই খুশি যে, আমি তার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে পেরেছি।”
আলিনগর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল লতিব বলেন, “প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে ওসি রইস উদ্দীনের আচরণ সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি সাধারণ মানুষের সেবায় সরাসরি অভিযোগ শুনছেন এবং ঘটনাগুলোর সত্যতা যাচাই করে আইনি সহায়তা দিচ্ছেন।” ওসি রইস উদ্দীনের সেবায় সন্তুষ্ট হয়ে সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যেই তার সেবামূলক কাজের প্রশংসা করছেন।
এক সেবা প্রার্থী জানান, “আগে থানায় দালালদের দৌরাত্ম্য ছিল, কিন্তু নতুন ওসি যোগদানের পর থানা হয়েছে দালালমুক্ত।” এমন উদ্যোগের কারণে তিনি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছেন। এছাড়া অসহায় নারীদের জন্য আইনি সহায়তা প্রদান এবং বিভিন্ন অভিযোগের সমাধানে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রইস উদ্দীন বলেন, “আমার রুমে প্রবেশ করতে কোনো অনুমতি প্রয়োজন নেই। আমি সেবা প্রার্থীদের সঙ্গে বন্ধুর মতো আচরণ করি। পুলিশ জনগণের বন্ধু, এবং আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে তাদের সেবা প্রদান করতে চাই।”
তার এই উদ্যোগ জনগণের কাছে পুলিশিং সেবাকে আরো সহজলভ্য ও গ্রহণযোগ্য করেছে, এবং তিনি বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এক পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন।