বর্ষার আগেই বিপন্ন খোয়াই: অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই
হবিগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খোয়াই নদী দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে বিপন্ন হয়ে উঠেছে। নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন এবং তীরবর্তী বাঁধের মাটি কাটার কারণে নদী তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারিয়েছে। বর্ষায় হবিগঞ্জ শহরসহ জেলার হাওরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
খোয়াই নদীর মশাজান পয়েন্ট থেকে যশোরআব্দা পর্যন্ত নদীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নদীর তীর এবং চর থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে অবাধে। এসব বালু ও মাটি ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে পরিবহন করা হচ্ছে জেলার বিভিন্ন স্থানে। এ অবৈধ কার্যক্রমের ফলে নদীর তীরবর্তী বাঁধের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের কারণে বাঁধের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়েছে। যশোরআব্দা পয়েন্টের বাসিন্দা আবুল কাশেম মিয়া বলেন, বাঁধ থেকে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে আসন্ন বর্ষায় শহর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। শাহজাহান মিয়া নামে আরেকজন স্থানীয় ব্যক্তি জানান, ভারি ট্রাক্টরগুলো বাঁধের ওপর দিয়ে চলাচল করায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলনের ফলে খোয়াই নদীর তলদেশের অবকাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে। এতে পানির ধারণক্ষমতা কমে গেছে এবং বর্ষার সময় শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নদীর প্রাণ-প্রকৃতি বিলুপ্ত হওয়ার পথে। প্রশাসনের নীরব ভূমিকাও অত্যন্ত হতাশাজনক।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াংকা পাল জানান, হবিগঞ্জ সদর অংশে একটিই বালুমহাল ইজারা দেওয়া আছে। অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খোয়াই নদীর বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করতে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্বেগ নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। খোয়াই নদী রক্ষা করা হবিগঞ্জ শহর ও এর আশেপাশের এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।