হার্ভার্ডের ২২০ কোটি ডলারের তহবিল স্থগিত করল ট্রাম্প প্রশাসন
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইহুদি-বিদ্বেষ বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত ২.২ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ২২০ কোটি ডলার) ফেডারেল ফান্ড স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) হোয়াইট হাউস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া ফেডারেল অর্থ সহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে স্থগিত করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পাদিত ছয় কোটি ডলারের একটি চুক্তিও।
শিক্ষা দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলাকালে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, এসব আন্দোলনের কারণে ইহুদি শিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ পরিস্থিতি ঠেকাতে হোয়াইট হাউস কিছু নির্দেশনা দিয়েছিল, যার মধ্যে প্রশাসনে পরিবর্তন, ভর্তি প্রক্রিয়ায় নজরদারি এবং নিয়োগে ইহুদিবিদ্বেষ বিরোধী নীতি অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়।
তবে হার্ভার্ড এসব শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন এম গার্বার বলেন, “এই শর্তগুলো মানা হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হবে। আমরা আমাদের স্বাধীনতা বিসর্জন দেব না।”
তিনি আরও জানান, “ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি, তবে হোয়াইট হাউসের চাপের মুখে পড়ে নিজেদের নীতিতে হস্তক্ষেপ করতে পারি না।”
হার্ভার্ডের অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার পরই ট্রাম্প প্রশাসন তাদের বরাদ্দকৃত অর্থ অবরুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
শিক্ষা দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, “শিক্ষা বাধাপ্রাপ্ত হবে, এমন পরিস্থিতি আমরা মেনে নিতে পারি না। এখনও সময় আছে—হার্ভার্ড চাইলে গঠনমূলক পরিবর্তনের মাধ্যমে আবার সহায়তা পেতে পারে।”
এটি যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার স্বাধীনতা বনাম কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিগত হস্তক্ষেপের একটি নজিরবিহীন বিতর্ক তৈরি করেছে, যেখানে হার্ভার্ড প্রথমবারের মতো প্রশাসনের চাপে নতি স্বীকার না করার অবস্থান নিয়েছে।