ঢাকা ০১:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জে পারিবারিক বিরোধে ছোট ভাই বাড়িছাড়া, বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার::

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার খড়কী গ্রামের মাষ্টারবাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান পারিবারিক বিরোধের জেরে ছোট ভাই আব্দুল রাজ্জাক খান নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হয়ে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার বড় ভাই মৌলানা আব্দুল কাদির খানের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্যাতন এবং ভিটেমাটি দখলের অভিযোগ তুলেছেন রাজ্জাক খান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত গোলাপ খানের চার ছেলে—আব্দুর রহিম খান, মৌলানা আব্দুল কাদির খান, আব্দুল জলিল খান ও আব্দুল রাজ্জাক খান—এবং দুই মেয়ে মনোয়ারা খান ও জেসমিন আরা খান একসময় একত্রে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ শুরু হয়।

অভিযোগ অনুযায়ী, গোলাপ খান জীবিত থাকাকালীন সময়ে মৌলানা কাদির তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির প্রভাব খাটিয়ে একপ্রকার চক্রান্ত করে পৈতৃক সম্পত্তির দলিলে ছোট ভাই রাজ্জাক খান ও এক বোনকে বাদ দেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ‘লাঠিয়াল শক্তি’র প্রভাব ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন তিনি।

এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ছোট ভাই রাজ্জাক খান স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে ধরনা দেন। কিন্তু মৌলানা কাদির কোনো সালিশ বা সিদ্ধান্ত মানেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি রাজ্জাক খান নিজ বসতভিটায় নতুন ঘর নির্মাণের চেষ্টা করলে, মৌলানা কাদির ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ‘লাঠিয়াল বাহিনী’সহ ঝাঁপিয়ে পড়ে তার ঘর ভাঙচুর করে এবং সীমান্ত নির্ধারণকারী পিলার উপড়ে ফেলে বলে অভিযোগ করা হয়।

পরবর্তীতে রাজ্জাক খানের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেন মৌলানা কাদির। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই দুই ভাইয়ের মাঝে জমি নিয়ে বিরোধ চললেও মীমাংসা সম্ভব হয়নি কাদির খানের একরোখা মনোভাবের কারণে। কেউ কিছু বললে তাকেও হুমকি-ধমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাদের।

এ বিষয়ে স্থানীয় মুরুব্বিয়ানরা জানান, “আমরা বহুবার সালিশ করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু মৌলানা কাদির কারো কথা শুনেন না। তিনি শুধু গায়ের জোরে চলেন।”

একাধিক ব্যক্তি জানান, কাদির খান প্যাসিভ আওয়ামী উলামা লীগের সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চলেন, কারো পরোয়া করেন না। এলাকাবাসীর অনেকেই তাকে একজন সমাজবিরোধী, বিচার অমান্যকারী ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন।

অবস্থার অবনতির কারণে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, যদি শীঘ্রই প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ, এমনকি প্রাণহানির মত ঘটনাও ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফোনে যোগাযোগ করা হলে মৌলানা কাদির খান আমাদের প্রতিবেদককে সংক্ষিপ্তভাবে জানান, “আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।” এ সময় তিনি রাগান্বিত প্রতিক্রিয়া দেখান।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:১৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
৮৫৫ বার পড়া হয়েছে

হবিগঞ্জে পারিবারিক বিরোধে ছোট ভাই বাড়িছাড়া, বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ

আপডেট সময় ১০:১৯:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার খড়কী গ্রামের মাষ্টারবাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে চলমান পারিবারিক বিরোধের জেরে ছোট ভাই আব্দুল রাজ্জাক খান নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হয়ে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার বড় ভাই মৌলানা আব্দুল কাদির খানের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্যাতন এবং ভিটেমাটি দখলের অভিযোগ তুলেছেন রাজ্জাক খান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত গোলাপ খানের চার ছেলে—আব্দুর রহিম খান, মৌলানা আব্দুল কাদির খান, আব্দুল জলিল খান ও আব্দুল রাজ্জাক খান—এবং দুই মেয়ে মনোয়ারা খান ও জেসমিন আরা খান একসময় একত্রে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ শুরু হয়।

অভিযোগ অনুযায়ী, গোলাপ খান জীবিত থাকাকালীন সময়ে মৌলানা কাদির তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির প্রভাব খাটিয়ে একপ্রকার চক্রান্ত করে পৈতৃক সম্পত্তির দলিলে ছোট ভাই রাজ্জাক খান ও এক বোনকে বাদ দেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ‘লাঠিয়াল শক্তি’র প্রভাব ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন তিনি।

এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ছোট ভাই রাজ্জাক খান স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে ধরনা দেন। কিন্তু মৌলানা কাদির কোনো সালিশ বা সিদ্ধান্ত মানেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি রাজ্জাক খান নিজ বসতভিটায় নতুন ঘর নির্মাণের চেষ্টা করলে, মৌলানা কাদির ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ‘লাঠিয়াল বাহিনী’সহ ঝাঁপিয়ে পড়ে তার ঘর ভাঙচুর করে এবং সীমান্ত নির্ধারণকারী পিলার উপড়ে ফেলে বলে অভিযোগ করা হয়।

পরবর্তীতে রাজ্জাক খানের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেন মৌলানা কাদির। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই দুই ভাইয়ের মাঝে জমি নিয়ে বিরোধ চললেও মীমাংসা সম্ভব হয়নি কাদির খানের একরোখা মনোভাবের কারণে। কেউ কিছু বললে তাকেও হুমকি-ধমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাদের।

এ বিষয়ে স্থানীয় মুরুব্বিয়ানরা জানান, “আমরা বহুবার সালিশ করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু মৌলানা কাদির কারো কথা শুনেন না। তিনি শুধু গায়ের জোরে চলেন।”

একাধিক ব্যক্তি জানান, কাদির খান প্যাসিভ আওয়ামী উলামা লীগের সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চলেন, কারো পরোয়া করেন না। এলাকাবাসীর অনেকেই তাকে একজন সমাজবিরোধী, বিচার অমান্যকারী ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন।

অবস্থার অবনতির কারণে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, যদি শীঘ্রই প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ, এমনকি প্রাণহানির মত ঘটনাও ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফোনে যোগাযোগ করা হলে মৌলানা কাদির খান আমাদের প্রতিবেদককে সংক্ষিপ্তভাবে জানান, “আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।” এ সময় তিনি রাগান্বিত প্রতিক্রিয়া দেখান।