হবিগঞ্জে কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন: ড্রেজার জব্দ
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী ও নৌ ফাঁড়ি পুলিশ। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বানিয়াচং ক্যাম্পের সদস্যরা এবং মার্কুলি বাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান চালায়।
অভিযানের সময় কুশিয়ারা নদী থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়। মার্কুলি নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নিরঞ্জন তালুকদার জানান, বর্তমানে মেশিনটি তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর ইউনিয়নের হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় প্রভাবশালী একটি চক্র কয়েক মাস ধরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ঘনফুট বালু-মাটি উত্তোলন করে আসছিল। চক্রটির নেতৃত্বে ছিলেন দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুক এবং তার সহযোগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মনজু কুমার দাস।
এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীরবর্তী ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট হুমকির মুখে পড়েছে। গভীর গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় নদী ভাঙনের শঙ্কা বাড়ছে, যা বিলীন করতে পারে শত শত একর জমি। অবৈধ কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে হামলার হুমকির মুখে পড়তে হয় স্থানীয়দের।
অবৈধ বালু উত্তোলনের ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত স্ব-প্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশকে। অভিযুক্তদের মধ্যে দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুকসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ড্রেজার মেশিন জব্দ করার পর অভিযান চলমান রয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, নিয়মিত নজরদারি বজায় থাকলে এলাকার পরিবেশ ও জীবিকা রক্ষা করা সম্ভব হবে।