স্কুল শিক্ষিকা থেকে ফিল্মি স্টাইলে হয়ে যান মেয়র, কে এই জাকিয়া?
পলাতক অবস্থায় চাকরি ছাড়েন জাকিয়া খাতুন, যিনি একসময় পঞ্চগড় ড. আবেদা হাফিজ স্কুল অ্যান্ড কলেজে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার জীবনযাত্রায় এক বিশাল পরিবর্তন আসে যখন তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন এবং সাবেক মেয়র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর, ভোটারবিহীন নির্বাচনে বিনা ভোটে পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
প্রভাবশালী মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মাহমুদা বেগম কৃকের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করা জাকিয়া খাতুন তার প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদেরসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক ছিল, যা তাকে দ্রুত ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করে।
শুধু স্কুল শিক্ষকতার পেশা নয়, জাকিয়া খাতুন আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর দুর্নীতিতে জড়ান। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, বিশেষ করে পৌরসভার অর্থ লুটপাট, চাঁদাবাজি, অস্বাস্থ্যকর নির্মাণকাজ, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং তদবির বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষত, ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সুপার মার্কেটটি সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে তৈরি হওয়ায় তা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ঢাকায় বিলাসী জীবনযাপন শুরু করেন, ২ কোটি টাকার ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিপুল অর্থ ব্যয়ে তার মেয়েকে ঢাকার একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ান। পাশাপাশি, তার বাবার বাড়ি দিনাজপুরেও তিনি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছেন।
বর্তমানে জাকিয়া খাতুন হত্যা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ও বিএনপি অফিস ভাঙচুরসহ বেশ কয়েকটি মামলার পলাতক আসামি। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি মাসুদ জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং তিনি আত্মগোপন করে আছেন, তবে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, জাকিয়া খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে একাধিক সরকারি সুবিধা নিয়েছেন, এমনকি মেয়র হওয়ার সময়েও স্কুলের বেতন-ভাতাদি গ্রহণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, রাজনীতিতে তার আসা ছিল শুধুমাত্র নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এবং তিনি প্রভাবশালী নেতাদের সহায়তায় দ্রুত বিত্তশালী হয়ে ওঠেন।