ঢাকা ০৫:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে প্রবাসীর জমি দখলের অভিযোগ, চেয়ারম্যানের গরুর খামার

মোশফিকুর রহমান স্বপন, সুনামগঞ্জ::

ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এক প্রবাসীর ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখল করে গরুর খামার নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিলন খাঁনের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী সৌদি প্রবাসী মো. আব্দুর রশিদের দাবি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার জমি দখল করেছেন চেয়ারম্যান, প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও তিনি জমি ফিরে পাননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে বোগলাবাজার ইউনিয়নের মৃত আব্দুল মুনাফের ছেলে আব্দুর রশিদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিলন খাঁনের পিতা আব্দুস শহীদ খাঁনের কাছ থেকে দলিলমূলে ১৮ শতক জমি কিনে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করছিলেন। প্রায় সাত বছর ধরে ওই জমিতে বাউন্ডারি নির্মাণ করে দখলে রাখলেও ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মিলন খাঁনের নৌকা প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় নির্বাচনে বিজয়ের পর ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি জোরপূর্বক জমিটি দখল করেন বলে অভিযোগ।

অভিযোগে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যান মিলন খাঁন জমির চারপাশের বাউন্ডারি ভেঙে সেখানে একটি গরুর খামার নির্মাণ করেন, যেখানে চোরাই গরু রাখা হয় বলেও স্থানীয়দের দাবি। জমি ফেরত চাইতে গেলে প্রবাসী আব্দুর রশিদ ও তার ছেলে পায়েলকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী পায়েল আহমদ বলেন, “আমার বাবার ক্রয়কৃত জমি জোর করে দখল করেছেন চেয়ারম্যান। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা ও গুমের হুমকি দেন, জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া জানান, “২০১৬ সালের নির্বাচনে মিলন খাঁনকে ভোট না দেওয়ায় আব্দুর রশিদের জমি দখল করে নেন। জমির বাউন্ডারি ভেঙে গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার মেলেনি।”

একাধিক স্থানীয় বাসিন্দার মতে, চেয়ারম্যান মিলন খাঁনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। এলাকায় তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও প্রভাবের কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের পিতা আব্দুস শহীদ খাঁন বলেন, “আমি আব্দুর রশিদের কাছে ৩টি দাগে জমি বিক্রি করেছি। তবে যে জমি আমরা দখলে রেখেছি, সেটি তার নয়। তার জমি পুকুরপাড়ে, কিন্তু সে সেটি নিতে রাজি নয়।”

চেয়ারম্যান মিলন খাঁন বলেন, “এটি জমি সংক্রান্ত বিষয়। আমরা বসে সমাধান করার চেষ্টা করবো।”

দোয়ারাবাজার থানার এসআই মোহন বলেন, “ভূমি সংক্রান্ত বিষয় আদালতের আওতায় পড়ে। তবে উভয়পক্ষের সম্মতিতে সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি। তারা একে অপরের আত্মীয়ও, আশা করছি একটি সমাধানে পৌঁছানো যাবে।”

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:০৩:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
৫৪২ বার পড়া হয়েছে

সুনামগঞ্জে প্রবাসীর জমি দখলের অভিযোগ, চেয়ারম্যানের গরুর খামার

আপডেট সময় ১১:০৩:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় এক প্রবাসীর ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখল করে গরুর খামার নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিলন খাঁনের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী সৌদি প্রবাসী মো. আব্দুর রশিদের দাবি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার জমি দখল করেছেন চেয়ারম্যান, প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও তিনি জমি ফিরে পাননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে বোগলাবাজার ইউনিয়নের মৃত আব্দুল মুনাফের ছেলে আব্দুর রশিদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিলন খাঁনের পিতা আব্দুস শহীদ খাঁনের কাছ থেকে দলিলমূলে ১৮ শতক জমি কিনে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করছিলেন। প্রায় সাত বছর ধরে ওই জমিতে বাউন্ডারি নির্মাণ করে দখলে রাখলেও ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মিলন খাঁনের নৌকা প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় নির্বাচনে বিজয়ের পর ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি জোরপূর্বক জমিটি দখল করেন বলে অভিযোগ।

অভিযোগে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যান মিলন খাঁন জমির চারপাশের বাউন্ডারি ভেঙে সেখানে একটি গরুর খামার নির্মাণ করেন, যেখানে চোরাই গরু রাখা হয় বলেও স্থানীয়দের দাবি। জমি ফেরত চাইতে গেলে প্রবাসী আব্দুর রশিদ ও তার ছেলে পায়েলকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী পায়েল আহমদ বলেন, “আমার বাবার ক্রয়কৃত জমি জোর করে দখল করেছেন চেয়ারম্যান। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা ও গুমের হুমকি দেন, জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া জানান, “২০১৬ সালের নির্বাচনে মিলন খাঁনকে ভোট না দেওয়ায় আব্দুর রশিদের জমি দখল করে নেন। জমির বাউন্ডারি ভেঙে গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার মেলেনি।”

একাধিক স্থানীয় বাসিন্দার মতে, চেয়ারম্যান মিলন খাঁনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। এলাকায় তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও প্রভাবের কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের পিতা আব্দুস শহীদ খাঁন বলেন, “আমি আব্দুর রশিদের কাছে ৩টি দাগে জমি বিক্রি করেছি। তবে যে জমি আমরা দখলে রেখেছি, সেটি তার নয়। তার জমি পুকুরপাড়ে, কিন্তু সে সেটি নিতে রাজি নয়।”

চেয়ারম্যান মিলন খাঁন বলেন, “এটি জমি সংক্রান্ত বিষয়। আমরা বসে সমাধান করার চেষ্টা করবো।”

দোয়ারাবাজার থানার এসআই মোহন বলেন, “ভূমি সংক্রান্ত বিষয় আদালতের আওতায় পড়ে। তবে উভয়পক্ষের সম্মতিতে সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি। তারা একে অপরের আত্মীয়ও, আশা করছি একটি সমাধানে পৌঁছানো যাবে।”