সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পূর্ব বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ; আহত – ২
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী ঘাগটিয়া এলাকায় পূর্ব বিরোধের জেরে বিএনপি দলীয় নেতা আবুল কালাম গ্রুপ এবং আশরাফ আলী তালুকদার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আশরাফ আলী (৫৫) এবং তার ছেলে জুবায়ের (৩০) আহত হয়েছেন। আহতদের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঘাগটিয়া এলাকায় এ সংঘর্ষ ঘটে। উভয়পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলেছেন।
আবুল কালাম গ্রুপের দাবি, আশরাফ আলী তালুকদার গ্রুপের লোকজন শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা চাওয়াকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। অন্যদিকে, আশরাফ আলী তালুকদার দাবি করেন, আবুল কালাম গ্রুপের ছেলে তালহা ও তার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় তারা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ওমর ফারুক জানান, আবুল কালাম দীর্ঘদিন সুনামগঞ্জে ছিলেন, কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকায় ফিরে চাঁদাবাজি শুরু করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রচার হয়েছে। যারা চাঁদা দিতে অস্বীকার করে, তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
এলাকার একজন র্যাব কর্মকর্তা রাব্বি জানান, আবুল কালাম তার পাঁচ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
এদিকে, বিএনপি নেতা আবুল কালাম তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, আশরাফ আলী এবং তার ছেলে জুবায়ের শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছিল, যা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন।
আহত আশরাফ আলী তালুকদার বলেন, আবুল কালাম গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে নদীতে চাঁদাবাজি ও জমি দখল করে আসছে। চাঁদা না দেওয়ায় সোমবার সকালে তালহা, রুবেল, রানু মেম্বারসহ ৭-৮ জন দেশীয় অস্ত্রসহ অতর্কিত হামলা চালায়।
জুবায়ের জানান, কর্মস্থলে যাওয়ার সময় আবুল কালাম গ্রুপের লোকজন তার ওপর হামলা চালায় এবং তাকে ও তার বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, সংঘর্ষের বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে।