সারাদিন ভাংড়ি সংগ্রহ করে চলে এদের জীবন
রাজশাহীর শহর ও গ্রামের আনাচে-কানাচে সারাদিন ঘুরে বেড়ায় কিছু মানুষ, ভ্যানচালিত জীবিকার এক কঠিন বাস্তবতা নিয়ে। পুরোনো কাগজ, বই, কার্টুন, টিন, নষ্ট বোতল, ভাঙা প্লাস্টিক—এসব জিনিসই তাদের দিনযাপনের প্রধান অবলম্বন। সংগ্রহ করা মালপত্র শেষ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছে মহাজনের কাছে।
শহিদুল নামের এমনই একজন সংগ্রাহকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, “মোটামুটি যা হয়, তা দিয়েই চলে সংসার। রোদ-বৃষ্টি কিছুই দেখে না আমাদের কাজ। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি পথে পথে ঘুরে এসব জিনিস কুড়াতে হয়।”
মহাজনরা সংগ্রহ করা মাল বিভিন্নভাবে ভাগ করে নেন—কাগজ আলাদা, টিন আলাদা, লোহা বা প্লাস্টিক আলাদা। এই কাজে তার রয়েছে তিনজন কর্মচারী, যাদের দায়িত্ব এগুলো বাছাই করে ওজন করে বস্তায় ভরে রাখা।
এই বস্তাভর্তি মালপত্র পরে পাঠানো হয় রাজশাহীর বিসিক শিল্প এলাকায়। সেখানকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এগুলো কিনে নেয় এবং মেশিনে কুচি কুচি করে প্রক্রিয়াজাত করে। এসব রিসাইকেলকৃত উপকরণ পাঠানো হয় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন কারখানায়। পুনঃব্যবহার উপযোগী করে তৈরি হয় নতুন নতুন পণ্য।
এইভাবেই পুরোনো জিনিস নতুন রূপ পায়, আর অগণিত নিম্নআয়ের মানুষের জীবিকা জোগায় ভাংড়ির এই অদেখা জগৎ। আধুনিক বিশ্বের “রিসাইকেল” শব্দটা যাদের জীবনে বাস্তব অর্থে প্রতিফলিত, তারা যেন সমাজের এক নিঃশব্দ যোদ্ধা।