সাবেক মেয়র লিটনের পরিত্যক্ত বাড়িতে জিম্মি নাটক
রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পরিত্যক্ত বাড়ি নিয়ে সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। মহানগরীর উপশহরে অবস্থিত তার পরিত্যক্ত বাড়িটি এখন জিম্মি নাটকের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি ২০২৫) সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের হস্তক্ষেপে একটি কলেজছাত্রকে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে চার তরুণকে আটক করা হয়েছে। তারা মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
আটক চারজন হলেন শাহাদাত হোসেন, আকাশ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম এবং রাইফুল রহিম। এদের মধ্যে শাহাদাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের বাসিন্দা এবং অন্য তিনজন নাটোর সদরের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ফাহিম হোসেন জীম রাজশাহী নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজের ছাত্র। তিনি অভিযোগ করেন, আটক তরুণরা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে বাড়িটির গ্যারেজে আটকে রাখে। তাকে মারধর করে এবং দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
আটক শাহাদাত হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কোনো মুক্তিপণের টাকা দাবি করিনি। আমি শুধুমাত্র জীমকে বলেছিলাম তার বন্ধু ছাত্রলীগের সদস্যকে এনে দিতে। অন্ধকারে পরিত্যক্ত বাড়িতে থাকার বিষয়টি প্রসঙ্গে তিনি জানান, “যখন আমরা বাড়িতে আসি, তখন অন্ধকার ছিল না।”
জীমকে উদ্ধার করতে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান কাফি নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে তিনি পরিত্যক্ত বাড়িতে যান এবং সেখানে ভুক্তভোগী জীমকে গ্যারেজে আটকে থাকতে দেখেন। আটকরা নিজেদের ওপরের নির্দেশের কথা বললেও কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
ঘটনার পেছনে তাহাস নূর নামক একজনের নাম উঠে এসেছে। তিনি রাজশাহী কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ৫ আগস্টের আন্দোলনের সময় নগর ভবন পাহারায় যুক্ত ছিলেন। তাহাসের নাম উল্লেখ করে আটক চারজন জানিয়েছে, তারা তার নির্দেশেই কাজ করছিল। তবে তাহাস এ বিষয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এবং বলেছেন, “আমি পুলিশে খবর দিতে বলেছিলাম, পরবর্তী ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।”
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করেছে এবং চারজনকে থানায় নিয়ে এসেছে। ভুক্তভোগী যদি মামলা করেন, তবে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।