ঢাকা ১০:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে বিতর্কিত চাঁদাবাজি মামলা, সমালোচনার ঝড় হবিগঞ্জে

স্টাফ রিপোর্টার::

ছবি: সংবাদিক মুজাহিদ মসি

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্রায় কোটি টাকা সমমূল্যের সেগুন গাছ পাচারের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে উল্টো চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) মামলার খবর প্রকাশিত হলে জেলার সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

জানা যায়, গত শনিবার দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক ও ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাক্টিভিস্ট মুজাহিদ মসি এবং বাংলা টাইমসের প্রতিনিধি ত্রিপুরারী দেবনাথ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতছড়ি উদ্যানে সেগুন পাচারের প্রমাণ সংগ্রহে গেলে বন কর্মকর্তারা তাদের উপর হামলা চালান। এ ঘটনায় ওই দুই সাংবাদিক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে বন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বনের গাছ কাটার সত্যতা পান এবং সাংবাদিকদের সমর্থন জানান। এমনকি অভিযুক্ত বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

তবে এর পরদিনই সাতছড়ি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবুল কালামের নির্দেশনায়, সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা রেকর্ড করান।

সাংবাদিক মুজাহিদ মসি অভিযোগ করেন, “সেগুন গাছ পাচারের তথ্য ধামাচাপা দিতেই বন কর্মকর্তারা মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। সাংবাদিকতার কলমের কাছে এই অপকর্ম টিকবে না।”

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব নেতা ও আইনজীবী শাহ ফখরুজ্জামান বলেন, “মুজাহিদ মসি শুধু সাংবাদিকই নন, বন্যপ্রাণী রক্ষায়ও কাজ করেন। তিনি সেগুন পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য জাতির সামনে এনেছেন। অথচ উল্টো তাকে হয়রানি মামলা দিয়ে আক্রমণ করা হচ্ছে।”

এদিকে, মামলার বাদী বন কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ নিজেই সাংবাদিকদের হামলার মামলার আসামী। তাই তার স্বাক্ষরে মামলা দায়ের হওয়াকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছেন।

চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম বলেন, মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে এবং একজন এসআই তদন্ত করছেন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি ফোন কেটে দেন।

উল্লেখ্য, মামলার আসামী রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে সেগুন গাছ পাচার, বন্যপ্রাণী পাচার ও পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ আগেও উঠেছে। গণমাধ্যমে এসব নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৯:০৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৫২৩ বার পড়া হয়েছে

সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে বিতর্কিত চাঁদাবাজি মামলা, সমালোচনার ঝড় হবিগঞ্জে

আপডেট সময় ০৯:০৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্রায় কোটি টাকা সমমূল্যের সেগুন গাছ পাচারের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে উল্টো চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) মামলার খবর প্রকাশিত হলে জেলার সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

জানা যায়, গত শনিবার দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক ও ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাক্টিভিস্ট মুজাহিদ মসি এবং বাংলা টাইমসের প্রতিনিধি ত্রিপুরারী দেবনাথ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতছড়ি উদ্যানে সেগুন পাচারের প্রমাণ সংগ্রহে গেলে বন কর্মকর্তারা তাদের উপর হামলা চালান। এ ঘটনায় ওই দুই সাংবাদিক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে বন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বনের গাছ কাটার সত্যতা পান এবং সাংবাদিকদের সমর্থন জানান। এমনকি অভিযুক্ত বন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।

তবে এর পরদিনই সাতছড়ি রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবুল কালামের নির্দেশনায়, সাংবাদিক মুজাহিদ মসির বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা রেকর্ড করান।

সাংবাদিক মুজাহিদ মসি অভিযোগ করেন, “সেগুন গাছ পাচারের তথ্য ধামাচাপা দিতেই বন কর্মকর্তারা মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। সাংবাদিকতার কলমের কাছে এই অপকর্ম টিকবে না।”

হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব নেতা ও আইনজীবী শাহ ফখরুজ্জামান বলেন, “মুজাহিদ মসি শুধু সাংবাদিকই নন, বন্যপ্রাণী রক্ষায়ও কাজ করেন। তিনি সেগুন পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য জাতির সামনে এনেছেন। অথচ উল্টো তাকে হয়রানি মামলা দিয়ে আক্রমণ করা হচ্ছে।”

এদিকে, মামলার বাদী বন কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ নিজেই সাংবাদিকদের হামলার মামলার আসামী। তাই তার স্বাক্ষরে মামলা দায়ের হওয়াকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছেন।

চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম বলেন, মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে এবং একজন এসআই তদন্ত করছেন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি ফোন কেটে দেন।

উল্লেখ্য, মামলার আসামী রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে সেগুন গাছ পাচার, বন্যপ্রাণী পাচার ও পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ আগেও উঠেছে। গণমাধ্যমে এসব নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।