শেখ হাসিনাসহ পরিবারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং শেখ রেহানার তিন ছেলেমেয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
রোববার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত অন্য তিন আসামি হলেন শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক।
দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ১০ এপ্রিল একই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
দুদকের দায়ের করা অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা সরকারের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত থাকা অবস্থায় নিজের ও পরিবারের জন্য অনৈতিকভাবে রাজউকের পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পে ৬০ কাঠার ৬টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অসদুপায় অবলম্বন করেছেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা প্লট বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না। তারপরও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর সড়কে ওই প্লটগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় মোট আটটি পৃথক অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুদক, যেখানে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সায়মা ওয়াজেদসহ প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযুক্ত অন্য ব্যক্তিরা হলেন জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, পুরবী গোলদার, কাজী ওয়াছি উদ্দিন, মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক কর্মকর্তারা—আনিছুর রহমান মিঞা, মো. খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মো. নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম, শেখ শাহিনুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সালাহ উদ্দিন ও শরীফ আহমেদ।
গত বছরের ৫ আগস্ট ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতৃত্বে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা হারান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং এখন পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করছেন।