শেখ পরিবারের নাম না থাকায় জাতীয়করণ বঞ্চিত শতবর্ষী পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই করেও এখনও জাতীয়করণ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়টির সঙ্গে শেখ পরিবারের কোনো সদস্যের নাম না থাকায় রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়েছে এই প্রতিষ্ঠিত বিদ্যাপীঠ। বিষয়টি নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ১৯৩৯ সালে ‘পেড়িখালী পি. ইউ. বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ নামে যাত্রা শুরু করে এ প্রতিষ্ঠান। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে উপজেলা পর্যায়ে একটি করে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্ধারণ করা হলে রামপাল থেকে এই বিদ্যালয়টিকে নির্বাচিত করা হয়। পরবর্তীতে ৩১৫টি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৮৮টি জাতীয়করণ হলেও বাদ পড়ে ২৭টি প্রতিষ্ঠান। বাদ পড়াদের তালিকায় স্থান পায় পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
বিদ্যালয়টির রয়েছে চারতলা ভবন, আধুনিক আসবাব, বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমসহ আধুনিক শিক্ষার সব ব্যবস্থা। ফলাফলেও বরাবরই সেরা অবস্থানে থাকলেও নামটি আজও সরকারিকরণের গেজেটে স্থান পায়নি।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শংকর কুমার শিকদার অভিযোগ করে বলেন, “আমাদের বিদ্যালয়টি ফলাফল, অবকাঠামো ও সুনামের দিক থেকে রামপাল উপজেলায় শীর্ষে। জাতীয়করণের প্রাথমিক তালিকায় থাকলেও তৎকালীন সংসদ সদস্য, খুলনার একজন মেয়র এবং কিছু প্রভাবশালী আমলার হস্তক্ষেপে মোটা অঙ্কের লেনদেনের মাধ্যমে রাতারাতি নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।”
তিনি আরও জানান, এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এলাকাবাসী, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু প্রভাবশালীদের চাপে সেই আন্দোলনও স্তব্ধ হয়ে যায়।
সচেতন মহল মনে করেন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিদ্যালয়টি রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বজনপ্রীতির কারণে বঞ্চিত হয়েছে। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকার সব বৈষম্য দূর করে মডেল বিদ্যালয়গুলোর পূর্ণাঙ্গ জাতীয়করণ নিশ্চিত করবে—এমনটাই প্রত্যাশা রামপালবাসীর।