ঢাকা ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শায়েস্তাগঞ্জে ঋণের টাকা না পেয়ে যুবককে গোয়েন্দা কায়দায় হত্যা!

স্টাফ রিপোর্টার::

ছবি: জুবেল মিয়ার মরদেহ

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় তিনদিন আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের পরিবার বলছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের দাবি, নিহত যুবক তাদের বাড়িতে থেকে কাজ করতেন এবং রাতের ঘুমের মধ্যে আত্মহত্যা করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নের উজান শৈলজুড়া গ্রামে। নিহত যুবক সজল মিয়া (৩৮), উপজেলার পুঠিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও মৃত আরজু মিয়ার ছেলে। পেশায় তিনি একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন, পাশাপাশি কৃষিকাজ ও ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

নিহতের পরিবার জানায়, পার্শ্ববর্তী উজান শৈলজুড়া গ্রামের আবু তাহের মিয়ার ছেলে জুবেল মিয়ার কাছ থেকে অনেক আগে ৫ হাজার টাকা সুদে ধার নেন সজল। সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় সুদে-আসলে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২০ হাজার টাকা। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ৩ আগস্ট জুবেল মিয়া ও তার সহযোগীরা সজলকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যান এবং তিনদিন আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালান।

পরিবারের অভিযোগ, নির্যাতনের পর সজলকে তার পড়নের শার্ট দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে পুলিশ উজান শৈলজুড়া গ্রামের জুবেল মিয়ার বাড়ির একটি কক্ষ থেকে সজলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে অভিযুক্ত জুবেল মিয়া ও তার পরিবারের দাবি, “সজল আমাদের বাড়িতে থেকে কাজ করতেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পর সকালে দরজা না খোলায় আমরা পুলিশে খবর দিই। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।”

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কান্ত নাথ বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হলেও নিহতের পরিবারের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, সুদের নামে চড়া হারে অর্থ আদায় ও নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবৈধ সুদ ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

ঘটনার পর থেকেই জুবেল মিয়া পলাতক রয়েছেন।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১২:৪১:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫
৬৫১ বার পড়া হয়েছে

শায়েস্তাগঞ্জে ঋণের টাকা না পেয়ে যুবককে গোয়েন্দা কায়দায় হত্যা!

আপডেট সময় ১২:৪১:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ অগাস্ট ২০২৫

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় তিনদিন আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের পরিবার বলছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের দাবি, নিহত যুবক তাদের বাড়িতে থেকে কাজ করতেন এবং রাতের ঘুমের মধ্যে আত্মহত্যা করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নের উজান শৈলজুড়া গ্রামে। নিহত যুবক সজল মিয়া (৩৮), উপজেলার পুঠিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও মৃত আরজু মিয়ার ছেলে। পেশায় তিনি একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন, পাশাপাশি কৃষিকাজ ও ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন।

নিহতের পরিবার জানায়, পার্শ্ববর্তী উজান শৈলজুড়া গ্রামের আবু তাহের মিয়ার ছেলে জুবেল মিয়ার কাছ থেকে অনেক আগে ৫ হাজার টাকা সুদে ধার নেন সজল। সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় সুদে-আসলে ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২০ হাজার টাকা। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ৩ আগস্ট জুবেল মিয়া ও তার সহযোগীরা সজলকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যান এবং তিনদিন আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালান।

পরিবারের অভিযোগ, নির্যাতনের পর সজলকে তার পড়নের শার্ট দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে পুলিশ উজান শৈলজুড়া গ্রামের জুবেল মিয়ার বাড়ির একটি কক্ষ থেকে সজলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

অন্যদিকে অভিযুক্ত জুবেল মিয়া ও তার পরিবারের দাবি, “সজল আমাদের বাড়িতে থেকে কাজ করতেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পর সকালে দরজা না খোলায় আমরা পুলিশে খবর দিই। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।”

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কান্ত নাথ বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হলেও নিহতের পরিবারের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, সুদের নামে চড়া হারে অর্থ আদায় ও নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবৈধ সুদ ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

ঘটনার পর থেকেই জুবেল মিয়া পলাতক রয়েছেন।