ঢাকা ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লাখাইয়ে রাঢ়িশাল মহাপ্রভু আখড়া কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

এম এ ওয়াহেদ, লাখাই, হবিগঞ্জ::

ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার করাব ইউনিয়নের রাঢ়িশাল মহাপ্রভু আখড়া কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ জুলাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রাঢ়িশালের প্রবীর চন্দ্র দাশসহ কয়েকজন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৮০ বছরের পুরোনো এই আখড়া দীর্ঘ ২৫-৩০ বছর ধরে একই কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু এত বছরে আখড়ার কোনো হিসাব-নিকাশ বা আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন। এতে ভক্ত ও সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়, আখড়ার নামে ১২ একর রেজিস্ট্রিকৃত জমি, একটি পুকুর এবং আনুমানিক ৭ বিঘা অলিখিত জমি রয়েছে। এসব সম্পত্তির আয়ের কোনো স্বচ্ছতা বা ব্যয়ের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। অভিযোগে বলা হয়, কমিটির সভাপতি দিলীপ সিনহা, সাধারণ সম্পাদক দুর্গাপদ চক্রবর্তী ও কোষাধ্যক্ষ অসিত দেব দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা ধরে রেখে ব্যক্তিস্বার্থে পরিচালনা করে আসছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাঢ়িশাল গ্রামে প্রায় ১,২০০ হিন্দু ভোটার রয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, প্রতিবছর মাত্র দুটি পূজা আয়োজন ছাড়া কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হয় না। এতে গ্রামের নারী, পুরুষ ও শিশুরা ধর্মীয় কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান কমিটির কাছে আর্থিক হিসাব বা জবাবদিহি চাওয়া হলে সাধারণ মানুষকে হুমকি, ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের ভয় দেখানো হয়। ফলে ভক্তদের একাংশ বর্তমানে আখড়ায় উপাসনা করা থেকেও বিমুখ হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে পূজা উদযাপন পরিষদসহ একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রণেশ গোস্বামী বলেন, “আমি শুনেছি, ওই আখড়ার কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হিসাব সংক্রান্ত বিরোধ চলছে।”

অন্যদিকে আখড়ার সভাপতি দিলীপ সিনহা বলেন, “আমি গত ২৫-৩০ বছর ধরে আখড়ার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি এবং প্রতিবছর হিসাব দেই। তবে আখড়ার অধীন কত একর জমি আছে, তা না দেখে বলতে পারব না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপ বলেন, “আখড়া কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়মের কোনো লিখিত অভিযোগ এখনও আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১০:৪১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
৬৪৮ বার পড়া হয়েছে

লাখাইয়ে রাঢ়িশাল মহাপ্রভু আখড়া কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

আপডেট সময় ১০:৪১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার করাব ইউনিয়নের রাঢ়িশাল মহাপ্রভু আখড়া কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ জুলাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রাঢ়িশালের প্রবীর চন্দ্র দাশসহ কয়েকজন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৮০ বছরের পুরোনো এই আখড়া দীর্ঘ ২৫-৩০ বছর ধরে একই কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু এত বছরে আখড়ার কোনো হিসাব-নিকাশ বা আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন। এতে ভক্ত ও সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়, আখড়ার নামে ১২ একর রেজিস্ট্রিকৃত জমি, একটি পুকুর এবং আনুমানিক ৭ বিঘা অলিখিত জমি রয়েছে। এসব সম্পত্তির আয়ের কোনো স্বচ্ছতা বা ব্যয়ের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। অভিযোগে বলা হয়, কমিটির সভাপতি দিলীপ সিনহা, সাধারণ সম্পাদক দুর্গাপদ চক্রবর্তী ও কোষাধ্যক্ষ অসিত দেব দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতা ধরে রেখে ব্যক্তিস্বার্থে পরিচালনা করে আসছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রাঢ়িশাল গ্রামে প্রায় ১,২০০ হিন্দু ভোটার রয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, প্রতিবছর মাত্র দুটি পূজা আয়োজন ছাড়া কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হয় না। এতে গ্রামের নারী, পুরুষ ও শিশুরা ধর্মীয় কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, বর্তমান কমিটির কাছে আর্থিক হিসাব বা জবাবদিহি চাওয়া হলে সাধারণ মানুষকে হুমকি, ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের ভয় দেখানো হয়। ফলে ভক্তদের একাংশ বর্তমানে আখড়ায় উপাসনা করা থেকেও বিমুখ হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে পূজা উদযাপন পরিষদসহ একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়।

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রণেশ গোস্বামী বলেন, “আমি শুনেছি, ওই আখড়ার কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হিসাব সংক্রান্ত বিরোধ চলছে।”

অন্যদিকে আখড়ার সভাপতি দিলীপ সিনহা বলেন, “আমি গত ২৫-৩০ বছর ধরে আখড়ার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি এবং প্রতিবছর হিসাব দেই। তবে আখড়ার অধীন কত একর জমি আছে, তা না দেখে বলতে পারব না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপ বলেন, “আখড়া কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়মের কোনো লিখিত অভিযোগ এখনও আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”