লাখাইয়ে প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধের অভিযোগ
হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার মুড়িয়াউক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৈয়দা সুলতানার স্বেচ্ছাচারিতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্টাফদের বেতন-ভাতা বন্ধ থাকার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক নুরুল আমীনের সঙ্গে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান মোল্লার দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই বিরোধের অংশ হিসেবে প্রধান শিক্ষক নুরুল আমীনকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার স্থানে নুরুজ্জামান মোল্লার আত্মীয় সৈয়দা সুলতানাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে সৈয়দা সুলতানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। সর্বশেষ অভিযোগে জানা গেছে, গত ডিসেম্বর মাসে শিক্ষক ও স্টাফদের বেতন-ভাতার বিল তৈরি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা সুলতানার কাছে উপস্থাপন করা হয়। তবে প্রধান শিক্ষক নুরুল আমীনের বেতন বিল বাদ দেওয়ার কারণে ইউএনও ওই বিল অনুমোদন করতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন আটকে যায় এবং তারা আর্থিক সংকটে পড়েন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোশাররফ হোসেন বলেন, “প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক নুরুল আমীনসহ আমাদের বেতন বিল দাখিল না করার কারণেই আমরা বেতন পাচ্ছি না। এই দায়ভার সম্পূর্ণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৈয়দা সুলতানার।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা সুলতানা জানান, “সরকারি বিধি অনুযায়ী, কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে ৬০ দিনের মধ্যে তার বেতন স্থগিত থাকতে পারে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নুরুল আমীনের ক্ষেত্রে ৬০ দিন অতিবাহিত হলেও তার বেতন বিল তৈরি করা হয়নি। ফলে আমি পুরো বেতন বিল অনুমোদন করতে পারিনি। এটি সম্পূর্ণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ।”
ইউএনও নাহিদা সুলতানা আরও জানান, “সৈয়দা সুলতানার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। খুব শিগগিরই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রধান শিক্ষক পরিবর্তন এবং পরিচালনা কমিটির দ্বন্দ্বের ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকদের বেতন বন্ধ থাকায় তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান এবং শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন।