ঢাকা ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেল ও জনবল সংকটে ধুকছে ঈশ্বরগঞ্জের দুই রেলওয়ে স্টেশন

আব্দুল্লাহ আল নোমান, ঈশ্বরগঞ্জ প্রতিনিধি::

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী রেল স্টেশনে মোট ৯জন জনবলের বিপরীতে বর্তমানে দুইজন স্থায়ী একজন অস্হায়ী গেইটম্যান ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার দিয়ে সোহাগী স্টেশন কার্যক্রম এবং ঈশ্বরগঞ্জ স্টেশনে মোট ছয়জন জনবলের বিপরীতে একজন পয়েন্ট ম্যান ও সোহাগী, ঈশ্বরগঞ্জের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার দিয়ে কোনমতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী এ দুটি রেল স্টেশনের কার্যক্রম।

 

অপরদিকে ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী রেল স্টেশন হয়ে ময়মনসিংহ-ভৈরব রেল পথে মোট ১০টি( পাঁচ জোড়া ) ট্রেন চলাচল করলেও করোনার সময় তিন জোড়া ছয়টি কমে গিয়ে বর্তমানে দুই জোড়া ট্রেন চলছে। সোহাগী ও ঈশ্বর গঞ্জে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেসের যাত্রা বিরতি থাকলেও বাকি তিনটির কোন যাত্রা বিরতি নেই।ফলে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেসই ওই দু’টি স্টেশনের একমাত্র ভরশা। ময়মনসিংহ-ভৈরব রেল পথে ট্রেন সংকট ও ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী রেল স্টেশন দু’টিতে জনবল সংকটের কারণে একদিকে এ স্টেশন দুটি যেমন ধুকেমরছে অন্য দিকে যাত্রীদের ভোগান্তিসহ প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার । জনবল ট্রেন সংকট নিরসন হলে স্টেশন দুটি সচল হবে অপর দিকে ফিরে পাবে তাদের হারানো ঐতিহ্য বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়।

সোহাগী স্টেশনের লেবার উমেশ চৌহান ও ব্যবসায়ী ইসলাম উদ্দিন জানান, স্টেশনটি দেখভাল করার মতো কেউ না থাকায় সিগন্যাল রুমের তারগুলো চুরি হয়ে গেছে। ফলে স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা না থাকায় এ স্টেশনে এখন আর ট্রেন ক্রসিং হয় না।

 

অন্যদিকে, ময়মনসিংহ – ভৈরব রেলপথে ঈশ্বরগঞ্জে সবজি ও সোহাগী বাজার চাটাই ব্যবসার রড় মোকাম। এখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার সবজি চাটাই রেলপথে ভৈরব, চট্রগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী স্টেশনে স্টেশন মাস্টার সহ জনবল সংকট থাকায় পরিবহন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য সড়ক পথে রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে ব্যায় বেড়ে যাওয়ায় তাদের আয় হচ্ছে কম পাশাপাশি অতিরিক্ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।

ঈশ্বরগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী আল আমিন জানান, এ স্টেশনে কর্মকর্তা কর্মচারী পদায়ন হলে যাত্রী ও পণ্য বুকিং সেবা বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসায়ীরা সড়ক পথের পরিবর্তে আবার রেলপথে পণ্য পরিবহনে উৎসাহিত হবে। এতে ব্যবসায়ীদের যেমন পরিবহন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে তেমনি রেলের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

আঠারবাড়ী রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান জানান, করুণার সময় বন্ধ হওয়ার পর থেকে স্টেশন মাস্টার ও জনবল সংকটের কারণে স্টেশন দু’টির স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্টেশন দু’টিতে স্টেশন মাস্টার সহ জনবল পেলে আগের মতোই স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে।

 

উল্লেখ যে, ময়মনসিংহ-ভৈরব রেল পথে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদরে ঈশ্বরগঞ্জ রেলস্টেশন ও উপজেলা সদসদর থেকে ৪কিলোমিটার দূরে সোহাগী ইউনিয়নের সোহাগী বাজারে অবস্থিত সোহাগী রেল স্টেশন। ঐতিহ্যবাহী স্টেশন হিসেবে রেল বিভাগে ওই দুটি স্টেশনের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। যাত্রী ছাউনি আবাসিক কোয়াটার স্টেশন মাস্টার অফিস কক্ষ সিগন্যাল ব্যবস্থাসহ দুটি স্টেশনই স্বয়ংসম্পূর্ণ রেল স্টেশন। কালক্রমে জনবল ও ট্রেন সংখ্যা হ্রাস পেতে পেতে স্টেশন দুটি বর্তমানে নাজেহাল অবস্থায় পৌঁছেছে । পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এ স্টেশন দু’টিতে রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে রেলওয়ের অনেক সরকারি সম্পদ বেহাত হয়ে যাচ্ছে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১২:০৭:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৫০৩ বার পড়া হয়েছে

রেল ও জনবল সংকটে ধুকছে ঈশ্বরগঞ্জের দুই রেলওয়ে স্টেশন

আপডেট সময় ১২:০৭:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী রেল স্টেশনে মোট ৯জন জনবলের বিপরীতে বর্তমানে দুইজন স্থায়ী একজন অস্হায়ী গেইটম্যান ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার দিয়ে সোহাগী স্টেশন কার্যক্রম এবং ঈশ্বরগঞ্জ স্টেশনে মোট ছয়জন জনবলের বিপরীতে একজন পয়েন্ট ম্যান ও সোহাগী, ঈশ্বরগঞ্জের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার দিয়ে কোনমতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী এ দুটি রেল স্টেশনের কার্যক্রম।

 

অপরদিকে ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী রেল স্টেশন হয়ে ময়মনসিংহ-ভৈরব রেল পথে মোট ১০টি( পাঁচ জোড়া ) ট্রেন চলাচল করলেও করোনার সময় তিন জোড়া ছয়টি কমে গিয়ে বর্তমানে দুই জোড়া ট্রেন চলছে। সোহাগী ও ঈশ্বর গঞ্জে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেসের যাত্রা বিরতি থাকলেও বাকি তিনটির কোন যাত্রা বিরতি নেই।ফলে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেসই ওই দু’টি স্টেশনের একমাত্র ভরশা। ময়মনসিংহ-ভৈরব রেল পথে ট্রেন সংকট ও ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী রেল স্টেশন দু’টিতে জনবল সংকটের কারণে একদিকে এ স্টেশন দুটি যেমন ধুকেমরছে অন্য দিকে যাত্রীদের ভোগান্তিসহ প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার । জনবল ট্রেন সংকট নিরসন হলে স্টেশন দুটি সচল হবে অপর দিকে ফিরে পাবে তাদের হারানো ঐতিহ্য বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়।

সোহাগী স্টেশনের লেবার উমেশ চৌহান ও ব্যবসায়ী ইসলাম উদ্দিন জানান, স্টেশনটি দেখভাল করার মতো কেউ না থাকায় সিগন্যাল রুমের তারগুলো চুরি হয়ে গেছে। ফলে স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা না থাকায় এ স্টেশনে এখন আর ট্রেন ক্রসিং হয় না।

 

অন্যদিকে, ময়মনসিংহ – ভৈরব রেলপথে ঈশ্বরগঞ্জে সবজি ও সোহাগী বাজার চাটাই ব্যবসার রড় মোকাম। এখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার সবজি চাটাই রেলপথে ভৈরব, চট্রগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। ঈশ্বরগঞ্জ ও সোহাগী স্টেশনে স্টেশন মাস্টার সহ জনবল সংকট থাকায় পরিবহন সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য সড়ক পথে রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে ব্যায় বেড়ে যাওয়ায় তাদের আয় হচ্ছে কম পাশাপাশি অতিরিক্ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।

ঈশ্বরগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী আল আমিন জানান, এ স্টেশনে কর্মকর্তা কর্মচারী পদায়ন হলে যাত্রী ও পণ্য বুকিং সেবা বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসায়ীরা সড়ক পথের পরিবর্তে আবার রেলপথে পণ্য পরিবহনে উৎসাহিত হবে। এতে ব্যবসায়ীদের যেমন পরিবহন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে তেমনি রেলের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।

আঠারবাড়ী রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান জানান, করুণার সময় বন্ধ হওয়ার পর থেকে স্টেশন মাস্টার ও জনবল সংকটের কারণে স্টেশন দু’টির স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্টেশন দু’টিতে স্টেশন মাস্টার সহ জনবল পেলে আগের মতোই স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে।

 

উল্লেখ যে, ময়মনসিংহ-ভৈরব রেল পথে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদরে ঈশ্বরগঞ্জ রেলস্টেশন ও উপজেলা সদসদর থেকে ৪কিলোমিটার দূরে সোহাগী ইউনিয়নের সোহাগী বাজারে অবস্থিত সোহাগী রেল স্টেশন। ঐতিহ্যবাহী স্টেশন হিসেবে রেল বিভাগে ওই দুটি স্টেশনের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। যাত্রী ছাউনি আবাসিক কোয়াটার স্টেশন মাস্টার অফিস কক্ষ সিগন্যাল ব্যবস্থাসহ দুটি স্টেশনই স্বয়ংসম্পূর্ণ রেল স্টেশন। কালক্রমে জনবল ও ট্রেন সংখ্যা হ্রাস পেতে পেতে স্টেশন দুটি বর্তমানে নাজেহাল অবস্থায় পৌঁছেছে । পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ এ স্টেশন দু’টিতে রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে রেলওয়ের অনেক সরকারি সম্পদ বেহাত হয়ে যাচ্ছে।