রাশিয়া বিশাল এক শক্তি, ইউক্রেনের উচিত সমঝোতা করা: ট্রাম্প
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে কিয়েভের সমঝোতায় যাওয়া ছাড়া উপায় নেই, কারণ “রাশিয়া একটি বিশাল শক্তি, আর ইউক্রেন তা নয়”-এমন মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শনিবার (১৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর এই অবস্থান জানান ট্রাম্প।
সূত্র বলছে, বৈঠকে পুতিন ইউক্রেনের কাছ থেকে আরও ভূখণ্ড দাবি করেন। ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে জানিয়েছেন, পুতিন যুদ্ধবিরতি মানতে রাজি আছেন যদি কিয়েভ পুরো দোনেৎস্ক অঞ্চল ছাড়ে। তবে জেলেনস্কি এ দাবিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে, যার মধ্যে দোনেৎস্কের তিন-চতুর্থাংশ এলাকা রয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধ থামাতে কেবল যুদ্ধবিরতি নয়, একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি প্রয়োজন। তার ভাষায়, “সবাই মেনে নিয়েছে, ভয়াবহ এই যুদ্ধ থামানোর সেরা উপায় হচ্ছে একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি, কারণ যুদ্ধবিরতি প্রায়ই টেকে না।”
ফক্স নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, ভূখণ্ড হস্তান্তর ও ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে তিনি ও পুতিন “মূলত একমত” হয়েছেন।
জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেন সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া কোনো ভূখণ্ড ছাড়তে পারবে না। তার মতে, দোনেৎস্কের স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোরস্ক শহরগুলো রাশিয়ার অগ্রযাত্রা ঠেকানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধক।
তিনি লিখেছেন, “হত্যাযজ্ঞ থামানোই যুদ্ধ থামানোর মূল শর্ত।”
তবে তিনি সোমবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
-
ইউরোপীয় মিত্ররা ট্রাম্পের মধ্যস্থতা স্বাগত জানালেও ইউক্রেনকে সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
-
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ভাডেফুল জানিয়েছেন, ইউরোপীয় নেতারাও সোমবারের বৈঠকে যোগ দিতে পারেন।
-
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা অপরিহার্য।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক অনেকাংশে মস্কোর অবস্থানের সঙ্গে মিলে যায়। পুতিন সবসময় বলে আসছেন, সমাধান জটিল কারণ দুই পক্ষের অবস্থান একেবারেই বিপরীত। তবে দীর্ঘ সময় পর ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক তার জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক সাফল্য।