ঢাকা ০৩:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রামপালে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন পণ্ড করতে পরিকল্পিত সহিংসতার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

হারুন শেখ, বাগেরহাট প্রতিনিধি::

ছবি: সংগৃহীত

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির আসন্ন সম্মেলনকে পণ্ড করতে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা চালানো হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিঠু। সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মিঠুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবিরসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।

মেহেদী হাসান মিঠু জানান, রামপালের ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টিতে ইতোমধ্যে সফলভাবে সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধুমাত্র মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের সম্মেলন বাকি। তাঁর বাবা আব্দুল আলিম হাওলাদার এ ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি এবং আসন্ন সম্মেলনে পুনরায় সভাপতি প্রার্থী। তাঁর জনপ্রিয়তা ও সম্ভাব্য বিজয় ঠেকাতেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের অনুসারীরা পরিকল্পিত সহিংসতায় মেতে উঠেছে বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, রোববার (৪ আগস্ট) বিকেলে প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা সন্নাসী বাজারে মানববন্ধনের নামে তাঁর বসতবাড়িতে হামলা চালায়। সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম হাওলাদার ও বিএনপি নেতা ফিরোজ শেখের নেতৃত্বে শতাধিক লোক বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর করে। তারা দেশীয় অস্ত্র ও পেট্রোল নিয়ে এসে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে।

ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। প্রাণ রক্ষায় পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় বাগেরহাট শহরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন বলে জানান মিঠু। তিনি আরও বলেন, হামলায় অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং তাঁদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মিঠু অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন সোমবারও বাজারে তাঁর পরিবারের দোকানে হামলা ও লুটপাট চালায়। বাড়ির রান্নাঘর ভেঙে ফেলে এবং বাজারের ব্যবসায়ীদের তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন না করার জন্য হুমকি দেয়।

তিনি আরও বলেন, সহিংসতা শুধু ইউনিয়ন নয়, পুরো উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব নিয়েও জটিলতা তৈরি করছে। বর্তমান উপজেলা আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান তুহিনের সমর্থকেরা ৮টি ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদুল ইসলামের অনুসারীরা মাত্র একটি ইউনিয়নে বিজয় লাভ করেছে। মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নে সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়ে আসন্ন উপজেলা সম্মেলন পেছানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির প্রতি তিনি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে পরিবার ও নেতাকর্মীদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানান।

গত কিছুদিন ধরে মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদার ও সাজারুল ইসলাম সাজুর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই জেরে কয়েকবার হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ শনিবার (৩ আগস্ট) রাতে বেতবুনিয়া এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকসহ ১১ জন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বিকেলে মানববন্ধনের ডাক দিলে সেটিকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়, যেখানে অন্তত ৫০ জন আহত হন এবং সন্নাসী বাজারে ২০টিরও বেশি দোকানে ভাঙচুর হয়।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:১১:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫
৫১৪ বার পড়া হয়েছে

রামপালে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন পণ্ড করতে পরিকল্পিত সহিংসতার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

আপডেট সময় ১১:১১:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ অগাস্ট ২০২৫

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির আসন্ন সম্মেলনকে পণ্ড করতে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা চালানো হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিঠু। সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মিঠুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবিরসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।

মেহেদী হাসান মিঠু জানান, রামপালের ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টিতে ইতোমধ্যে সফলভাবে সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধুমাত্র মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের সম্মেলন বাকি। তাঁর বাবা আব্দুল আলিম হাওলাদার এ ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি এবং আসন্ন সম্মেলনে পুনরায় সভাপতি প্রার্থী। তাঁর জনপ্রিয়তা ও সম্ভাব্য বিজয় ঠেকাতেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের অনুসারীরা পরিকল্পিত সহিংসতায় মেতে উঠেছে বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, রোববার (৪ আগস্ট) বিকেলে প্রতিপক্ষের সমর্থকেরা সন্নাসী বাজারে মানববন্ধনের নামে তাঁর বসতবাড়িতে হামলা চালায়। সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম হাওলাদার ও বিএনপি নেতা ফিরোজ শেখের নেতৃত্বে শতাধিক লোক বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর করে। তারা দেশীয় অস্ত্র ও পেট্রোল নিয়ে এসে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে।

ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। প্রাণ রক্ষায় পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় বাগেরহাট শহরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন বলে জানান মিঠু। তিনি আরও বলেন, হামলায় অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হন এবং তাঁদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মিঠু অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন সোমবারও বাজারে তাঁর পরিবারের দোকানে হামলা ও লুটপাট চালায়। বাড়ির রান্নাঘর ভেঙে ফেলে এবং বাজারের ব্যবসায়ীদের তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন না করার জন্য হুমকি দেয়।

তিনি আরও বলেন, সহিংসতা শুধু ইউনিয়ন নয়, পুরো উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব নিয়েও জটিলতা তৈরি করছে। বর্তমান উপজেলা আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান তুহিনের সমর্থকেরা ৮টি ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাহিদুল ইসলামের অনুসারীরা মাত্র একটি ইউনিয়নে বিজয় লাভ করেছে। মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নে সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়ে আসন্ন উপজেলা সম্মেলন পেছানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির প্রতি তিনি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে পরিবার ও নেতাকর্মীদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানান।

গত কিছুদিন ধরে মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদার ও সাজারুল ইসলাম সাজুর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই জেরে কয়েকবার হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ শনিবার (৩ আগস্ট) রাতে বেতবুনিয়া এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকসহ ১১ জন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার বিকেলে মানববন্ধনের ডাক দিলে সেটিকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়, যেখানে অন্তত ৫০ জন আহত হন এবং সন্নাসী বাজারে ২০টিরও বেশি দোকানে ভাঙচুর হয়।