রামপালে অনলাইন জুয়া রমরমা: যুব সমাজ ধ্বংসের পথে
ডিজিটাল প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। তবে এই প্রযুক্তির অপব্যবহারের একটি ভয়াবহ রূপ হিসেবে রামপাল উপজেলায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে অনলাইন জুয়া। এই ‘নতুন মাদক’ এর কবলে পড়ে ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে এলাকার যুব সমাজ।
রামপালের বিভিন্ন এলাকায় মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনেক যুবক স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন বেটিং ও ক্যাসিনো অ্যাপে জড়িয়ে পড়ছে। শুরুতে বিনোদনের জন্য সামান্য অর্থে অংশ নিলেও পরবর্তীতে বড় অঙ্কের টাকা হেরে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়ছে তারা। পরিবারের জমানো টাকা কিংবা ধার-দেনার ফাঁদে আটকে যাচ্ছে অনেকেই।
শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়ছে মারাত্মকভাবে। পড়াশোনার প্রতি অনাগ্রহ, মনোযোগে ঘাটতি, এমনকি স্কুল-কলেজ থেকে ঝরে পড়ার হারও বাড়ছে। একাধিক অভিভাবক ও শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, শিক্ষার্থীদের ব্যবহারগত পরিবর্তন স্পষ্টভাবে চোখে পড়ছে।
একজন অভিভাবক বলেন, “আমার ছেলে সারাদিন মোবাইলে অনলাইন জুয়া খেলে। পড়াশোনা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে। অনেকবার বোঝালেও সে শুনছে না।”
স্থানীয় এক শিক্ষক জানান, “শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমে গেছে। মানসিকভাবে অনেকেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঝনঝনিয়া এলাকায় সাহেদ নামের এক যুবক এই অনলাইন জুয়ার একটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে। যদিও এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।
রামপালবাসীর দাবি, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। অনলাইন জুয়া বন্ধে কঠোর নজরদারি, আইন প্রয়োগ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং পরিবারগুলোর সক্রিয় ভূমিকা এখন সময়ের দাবি।
যুব সমাজকে এই ধ্বংসের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে হলে এখনই নিতে হবে সম্মিলিত উদ্যোগ। নইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অপেক্ষা করছে এক অনিশ্চিত ও অন্ধকার পথ।