ঢাকা ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক

মো: গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী প্রতিনিধি::

ছবি: চেকপোস্ট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। এতদিন শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হলেও এখন থেকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।

গত ২২ জুলাই সমাজকর্ম বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নতুন এই পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দীন খান।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিজ্ঞাপিত পদসংখ্যার তিন গুণ বা তার বেশি আবেদনকারীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার যৌথ মূল্যায়নের ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।”

লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বোর্ডের সদস্যরা নিজেরা হাতে লিখে বোর্ডে জমা দেন এবং সেখান থেকে বোর্ড সভাপতি (উপাচার্য) প্রশ্ন বাছাই করেন। ৪৫ থেকে ৫০ মিনিটের পরীক্ষায় ৪-৫টি প্রশ্ন নির্ধারিত হয়। পরীক্ষার পর একজন সদস্য উত্তরপত্র কোডিং করেন এবং প্রত্যেক প্রশ্নকারী নিজ প্রশ্নের উত্তর মূল্যায়ন করেন। পরে নম্বর যোগ করে মেধাক্রম অনুযায়ী মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়।

তবে এই নতুন পদ্ধতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের মধ্যে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে। পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হক বলেন, “লিখিত পরীক্ষা বিভাগের শিক্ষকদের মূল্যায়ন ক্ষমতার ওপর আস্থাহীনতা প্রকাশ করে। ভাইভা ও প্রেজেন্টেশনই যথেষ্ট।”

গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. হারুনর রশিদ লিখেছেন, “বিশ্বের কোথাও এমনভাবে শিক্ষক নিয়োগ হয় না। বরং একাডেমিক রেজাল্টকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের বাদ পড়ার ঝুঁকি থাকে।”

অন্যদিকে, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, “নতুন প্রক্রিয়াটি আগের চেয়ে ভালো। তবে তিনি লিখিত, ভাইভা, রেজাল্ট, গবেষণা ও ডেমো ক্লাসের সম্মিলিত ১০০ নম্বর স্কেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর পরামর্শ দিয়েছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনের সুযোগ বাড়বে, যা রাবির শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১২:৪৯:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
৫১৮ বার পড়া হয়েছে

রাবিতে শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক

আপডেট সময় ১২:৪৯:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষা চালু করা হয়েছে। এতদিন শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হলেও এখন থেকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।

গত ২২ জুলাই সমাজকর্ম বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নতুন এই পদ্ধতির প্রথম প্রয়োগ করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দীন খান।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিজ্ঞাপিত পদসংখ্যার তিন গুণ বা তার বেশি আবেদনকারীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার যৌথ মূল্যায়নের ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।”

লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বোর্ডের সদস্যরা নিজেরা হাতে লিখে বোর্ডে জমা দেন এবং সেখান থেকে বোর্ড সভাপতি (উপাচার্য) প্রশ্ন বাছাই করেন। ৪৫ থেকে ৫০ মিনিটের পরীক্ষায় ৪-৫টি প্রশ্ন নির্ধারিত হয়। পরীক্ষার পর একজন সদস্য উত্তরপত্র কোডিং করেন এবং প্রত্যেক প্রশ্নকারী নিজ প্রশ্নের উত্তর মূল্যায়ন করেন। পরে নম্বর যোগ করে মেধাক্রম অনুযায়ী মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়।

তবে এই নতুন পদ্ধতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকের মধ্যে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে। পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হক বলেন, “লিখিত পরীক্ষা বিভাগের শিক্ষকদের মূল্যায়ন ক্ষমতার ওপর আস্থাহীনতা প্রকাশ করে। ভাইভা ও প্রেজেন্টেশনই যথেষ্ট।”

গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. হারুনর রশিদ লিখেছেন, “বিশ্বের কোথাও এমনভাবে শিক্ষক নিয়োগ হয় না। বরং একাডেমিক রেজাল্টকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের বাদ পড়ার ঝুঁকি থাকে।”

অন্যদিকে, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, “নতুন প্রক্রিয়াটি আগের চেয়ে ভালো। তবে তিনি লিখিত, ভাইভা, রেজাল্ট, গবেষণা ও ডেমো ক্লাসের সম্মিলিত ১০০ নম্বর স্কেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর পরামর্শ দিয়েছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনের সুযোগ বাড়বে, যা রাবির শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।