রাবিতে তথ্য কর্মকর্তা হলেন রাশেদুল ইসলাম, নিয়োগ নিয়ে চলছে বিতর্ক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জনসংযোগ দপ্তরে তথ্য কর্মকর্তা পদে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন রাশেদুল ইসলাম। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ‘পৃষ্ঠপোষক’ হিসেবে পরিচিত। সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
রাশেদুল ইসলাম ২০১৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেন এবং ২০২০ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বাসা রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায়। তিনি ২০১৯ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
এ নিয়োগের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেক শিক্ষার্থী প্রশ্ন তুলেছেন, তাকে কোনো বিশেষ কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কি না, এবং নিয়োগের প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন এ নিয়োগকে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে অভিযোগ করেছেন যে, প্রশাসন নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য এই নিয়োগ দিয়েছেন। অন্যদিকে, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ মনে করেন, চাকরির একমাত্র মানদণ্ড হওয়া উচিত মেধা, এবং এই নিয়োগ নিয়ে আরও তদন্ত প্রয়োজন।
এছাড়া, কিছু সাবেক শিক্ষার্থীও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। পলাশ নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, “এভাবে নিয়োগ দেওয়া হলে এর সঙ্গে সরকারের অনিয়মের কোনো পার্থক্য থাকবে না।” সাবেক শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান লিখেছেন, “যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ কেবল ক্ষমতার ভিত্তিতে হয়, তখন তা মেনে নেওয়া যায় না।” অন্যদিকে, সাবেক শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম জয় জানিয়েছেন, “রাশেদুল ইসলাম একজন দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি, যিনি তার অভিজ্ঞতা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবদান রাখতে পারবেন।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ জানিয়েছেন, “উপাচার্যের আদেশে রাশেদুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং এটি ছয় মাসের জন্য অ্যাডহক ভিত্তিতে কার্যকর হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব গণমাধ্যমকে জানান, “রাশেদুল ইসলাম তার মিডিয়া সংক্রান্ত চিন্তাভাবনা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবদান রাখার সুযোগ পাবেন। আমি বিশ্বাস করি, তিনি তার যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবেন।”