রাজশাহীতে প্রেমিক যুগলকে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখলো এলাকাবাসী
রাজশাহীর দুর্গাপুরে প্রেমের সম্পর্কের জেরে এক প্রেমিক যুগলকে এলাকাবাসী আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের নান্দিগ্রামে এই ঘটনাটি ঘটে। পরকীয়ার অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে এ দণ্ড কার্যকর করেন।
স্থানীয়রা জানান, আটককৃত যুবকের নাম আহসান হাবীব। তিনি পূর্বে থেকেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িত ছিলেন একই গ্রামের এক গৃহবধূর সঙ্গে। ঘটনার দিন তাদের ঘরের ভেতরে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে এক স্থানীয় ব্যক্তি। পরে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দুজনকে ধরে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
এসময় গ্রাম্য পুলিশ ও স্থানীয়রা পাহারায় ছিলেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, দুজনকে বেঁধে রাখা হলেও কোনো ধরনের শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আতিকুর রহমান জানান, “আহসান হাবীব এলাকায় একজন কুখ্যাত নারী লোভী হিসেবে পরিচিত। এর আগেও একাধিকবার নারী সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে নিয়ে সালিশ হয়েছে।”
অন্যদিকে আটক আহসান হাবীব দাবি করেন, “আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। জোর করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।”
তবে ভিন্ন বক্তব্য দেন ওই নারী। তিনি বলেন, “পটলের ক্ষেতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় আহসান আমাকে দুই হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে ঘরে ডাকে। পরে এলাকাবাসী এসে আমাদের ধরে ফেলে।”
বিকেলে ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনরত গ্রাম্য পুলিশ সাইফুল ইসলাম বলেন, “চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমরা পাহারায় আছি। তিনি ও গ্রামের মাতব্বররা আসলে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হতে পারে।”
নান্দিগ্রামের মাতব্বর আবু সাইদ বলেন, “আমি এলাকাবাসীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে বলেছি। কিন্তু তারা অপেক্ষা করছিলেন আমার উপস্থিতির জন্য।”
উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদ আলী সরদার বলেন, “আমি খবর পেয়ে গ্রাম্য পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এ ধরনের ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আমার নেই। থানা পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছি।”
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি দুরুল হুদা বলেন, “বিষয়টি আমরা শুনেছি। অভিযোগ কেউ করেনি। শুনেছি, তারা বিয়ে করতে চায়। তাই আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। তবে কাউকে এভাবে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা ঠিক নয়।”