রাজশাহীতে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবিতে কৃষকদের স্মারকলিপি
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের দাবিতে কৃষকেরা স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এ বছর বাঘায় প্রায় ১,৮৪০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। কৃষকেরা উচ্চমূল্যে বীজ কিনে চাষ করলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আমদানিকৃত পেঁয়াজের প্রভাবের কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্মারকলিপিতে জানানো হয়, প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফলন হয়েছে বিঘাপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ মণ, যার বাজারমূল্য ৫৫ থেকে ৮০ হাজার টাকা। এতে কৃষকদের প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।
চাষিরা জানান, পেঁয়াজের মৌসুমে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির কারণে বাজারমূল্য কমে গেছে। এতে তারা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। চাষিরা আশঙ্কা করছেন, এ অবস্থায় আগামী বছর পেঁয়াজ চাষ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
চাঁদপুর গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, তিনি ৪০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। বর্তমান বাজারমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হলে তার বিশাল লোকসান হবে। তিনি বলেন, “আমাদের একটাই দাবি, ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করা হোক। এতে আমরা ন্যায্যমূল্য পাব।”
অন্যান্য চাষিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পলাশী ফতেপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন, লিটন আলী, বজলুর রহমান; পাকুড়িয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম, সাবাজুল প্রামাণিক, সাইফুল ইসলাম, ফজলুল হক; এবং কলিগ্রামের মহিদুল ইসলাম।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার বলেন, “পেঁয়াজচাষিরা স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ আমদানির কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।”
চাষিরা জানান, তাদের এই দাবি না মানা হলে পেঁয়াজ চাষ বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনে দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের দাবি জানিয়েছেন কৃষকেরা।