ঢাকা ০৮:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে গ্রাহকের ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও ‘আল-বায়া’ এনজিও

মো: গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী প্রতিনিধি::

রাজশাহীর বাগমারায় গ্রাহকের প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে বেসরকারি এনজিও সংস্থা আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মাষ্টার আক্কাছ আলী এবং তার দুই ছেলে ও আত্মীয়স্বজন এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১৮ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় বাগমারা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন প্রতারিত ভুক্তভোগীরা। তারা বিষয়টি দ্রুত তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অর্থ ফেরতের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ভবানীগঞ্জ বাজারে প্রতিষ্ঠিত হয় আল-বায়া সমবায় সমিতি। গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের তেলিপুকুর গাঙ্গোপাড়া গ্রামের মাষ্টার আক্কাছ আলী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী। ২০১৭-১৮ সালে সমবায় অধিদপ্তর থেকে ক্ষুদ্র সঞ্চয় গ্রহণের অনুমতি পান তিনি। এরপর তিনি তার ছেলে রায়হান আলী শেখকে সাধারণ সম্পাদক এবং ভাগিনা সোহরাব হোসেনকে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব দেন।

প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত লাভের প্রলোভন দেখিয়ে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে পাশ বই ও মানি রিসিপ্টের মাধ্যমে প্রায় তিন কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে। প্রথম দিকে নিয়মিত লাভ প্রদান করায় অনেকেই আস্থা পোষণ করেন।

কিন্তু সম্প্রতি আমানত ফেরত চাওয়ায় নানা অজুহাত দেখাতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। একপর্যায়ে গ্রাহকদের চাপ বাড়লে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বর্তমানে তারা কেউই এলাকায় অবস্থান করছেন না, ফলে গ্রাহকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাজেকোলা গ্রামের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, “তারা অতিরিক্ত লাভের প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের থেকে টাকা নেয়। প্রথমে নিয়মিত লাভ দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করলেও এখন টাকা চাইলে তালবাহানা করে এবং শেষমেশ অফিসই বন্ধ করে দেয়।”

অভিযুক্ত আক্কাছ আলী শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “মাঠ পর্যায়ে টাকা আদায় করতে পারছি না, তাই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে সমস্যা হচ্ছে।”

ভুক্তভোগীরা প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাদের অর্থ ফেরতের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য প্রশাসন ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন – শাহাদৎ হোসেন, মতলেবুর রহমান, মিন্টু, মুনসুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, সেফাতুল্লাহ, মোছা. জোসনা বেগম, মোজাহার আলী, সোহেল রানা, মাহাবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও রহিদুল প্রমুখ।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৫:১৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
৫৩১ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহীতে গ্রাহকের ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও ‘আল-বায়া’ এনজিও

আপডেট সময় ০৫:১৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

রাজশাহীর বাগমারায় গ্রাহকের প্রায় তিন কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে বেসরকারি এনজিও সংস্থা আল-বায়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মাষ্টার আক্কাছ আলী এবং তার দুই ছেলে ও আত্মীয়স্বজন এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১৮ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় বাগমারা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন প্রতারিত ভুক্তভোগীরা। তারা বিষয়টি দ্রুত তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অর্থ ফেরতের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ভবানীগঞ্জ বাজারে প্রতিষ্ঠিত হয় আল-বায়া সমবায় সমিতি। গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের তেলিপুকুর গাঙ্গোপাড়া গ্রামের মাষ্টার আক্কাছ আলী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী। ২০১৭-১৮ সালে সমবায় অধিদপ্তর থেকে ক্ষুদ্র সঞ্চয় গ্রহণের অনুমতি পান তিনি। এরপর তিনি তার ছেলে রায়হান আলী শেখকে সাধারণ সম্পাদক এবং ভাগিনা সোহরাব হোসেনকে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব দেন।

প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত লাভের প্রলোভন দেখিয়ে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে পাশ বই ও মানি রিসিপ্টের মাধ্যমে প্রায় তিন কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে। প্রথম দিকে নিয়মিত লাভ প্রদান করায় অনেকেই আস্থা পোষণ করেন।

কিন্তু সম্প্রতি আমানত ফেরত চাওয়ায় নানা অজুহাত দেখাতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। একপর্যায়ে গ্রাহকদের চাপ বাড়লে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে যান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বর্তমানে তারা কেউই এলাকায় অবস্থান করছেন না, ফলে গ্রাহকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাজেকোলা গ্রামের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, “তারা অতিরিক্ত লাভের প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের থেকে টাকা নেয়। প্রথমে নিয়মিত লাভ দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করলেও এখন টাকা চাইলে তালবাহানা করে এবং শেষমেশ অফিসই বন্ধ করে দেয়।”

অভিযুক্ত আক্কাছ আলী শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “মাঠ পর্যায়ে টাকা আদায় করতে পারছি না, তাই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে সমস্যা হচ্ছে।”

ভুক্তভোগীরা প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাদের অর্থ ফেরতের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য প্রশাসন ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন – শাহাদৎ হোসেন, মতলেবুর রহমান, মিন্টু, মুনসুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, সেফাতুল্লাহ, মোছা. জোসনা বেগম, মোজাহার আলী, সোহেল রানা, মাহাবুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও রহিদুল প্রমুখ।