ঢাকা ০২:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুবককে ৯ খণ্ড করে হত্যা, প্রেমিকাসহ গ্রেফতার ২

চেকপোস্ট প্রতিবেদক::

সাভারে নিখোঁজ যুবক মো. সাজ্জাদ ইসলাম সবুজ (২৬)-এর ৯ টুকরো করা মরদেহ উদ্ধারের চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে রোকনুজ্জামান পলাশ (২৬) এবং তার কথিত স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার তৃষাকে (২৬)।

শনিবার (১২ এপ্রিল) পিবিআই ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ৩ এপ্রিল ভোরে সবুজ বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরিবারের পক্ষ থেকে পরদিন সাভার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর ৫ এপ্রিল কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত স্থান ও মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার একটি স্কুলের পাশ থেকে দুটি কার্টনের ভেতরে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের ৯ খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের মামা মহসিন মিয়া মরদেহের ছবি দেখে সাজ্জাদ ইসলাম সবুজকে শনাক্ত করেন।

পিবিআই জানায়, নিহত সবুজ ও গ্রেফতার সুমাইয়ার মধ্যে ফেসবুকে ফেক আইডির মাধ্যমে পরিচয় হয় এবং পরে অশ্লীল ও নগ্ন ছবি আদান-প্রদানের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের টানাপোড়েন ও দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে সবুজকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মরদেহ টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়।

তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পিবিআই জানতে পারে, রোকনুজ্জামান পলাশ হত্যার পর তার খালুর বাড়িতে আত্মগোপন করেন এবং সুমাইয়া পালিয়ে যান ফেনীতে। তারা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও পিবিআইয়ের তৎপরতায় তা সম্ভব হয়নি। সুমাইয়াকে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর এলাকা থেকে এবং পলাশকে অন্য একটি স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, নিহতের আইফোন, মরদেহ বহনের জন্য ব্যবহৃত গাড়ি ও কার্টন উদ্ধার করেছে। মামলায় এক ভ্যানচালক কামরুলও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

পিবিআই’র পুলিশ সুপার বলেন, “এটি একটি ভয়াবহ সামাজিক বিপর্যয়ের চিত্র, যেখানে অনলাইন সম্পর্ক পরিণত হয়েছে নির্মম হত্যায়। এ ধরনের সম্পর্ক ও ফাঁদ থেকে সামাজিকভাবে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।”

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ১১:০৮:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৫১৮ বার পড়া হয়েছে

যুবককে ৯ খণ্ড করে হত্যা, প্রেমিকাসহ গ্রেফতার ২

আপডেট সময় ১১:০৮:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

সাভারে নিখোঁজ যুবক মো. সাজ্জাদ ইসলাম সবুজ (২৬)-এর ৯ টুকরো করা মরদেহ উদ্ধারের চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে রোকনুজ্জামান পলাশ (২৬) এবং তার কথিত স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার তৃষাকে (২৬)।

শনিবার (১২ এপ্রিল) পিবিআই ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ৩ এপ্রিল ভোরে সবুজ বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরিবারের পক্ষ থেকে পরদিন সাভার মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর ৫ এপ্রিল কেরানীগঞ্জের শাক্তা ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত স্থান ও মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার একটি স্কুলের পাশ থেকে দুটি কার্টনের ভেতরে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের ৯ খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের মামা মহসিন মিয়া মরদেহের ছবি দেখে সাজ্জাদ ইসলাম সবুজকে শনাক্ত করেন।

পিবিআই জানায়, নিহত সবুজ ও গ্রেফতার সুমাইয়ার মধ্যে ফেসবুকে ফেক আইডির মাধ্যমে পরিচয় হয় এবং পরে অশ্লীল ও নগ্ন ছবি আদান-প্রদানের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের টানাপোড়েন ও দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে সবুজকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মরদেহ টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয়।

তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পিবিআই জানতে পারে, রোকনুজ্জামান পলাশ হত্যার পর তার খালুর বাড়িতে আত্মগোপন করেন এবং সুমাইয়া পালিয়ে যান ফেনীতে। তারা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করলেও পিবিআইয়ের তৎপরতায় তা সম্ভব হয়নি। সুমাইয়াকে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর এলাকা থেকে এবং পলাশকে অন্য একটি স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, নিহতের আইফোন, মরদেহ বহনের জন্য ব্যবহৃত গাড়ি ও কার্টন উদ্ধার করেছে। মামলায় এক ভ্যানচালক কামরুলও আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

পিবিআই’র পুলিশ সুপার বলেন, “এটি একটি ভয়াবহ সামাজিক বিপর্যয়ের চিত্র, যেখানে অনলাইন সম্পর্ক পরিণত হয়েছে নির্মম হত্যায়। এ ধরনের সম্পর্ক ও ফাঁদ থেকে সামাজিকভাবে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।”


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/checkpostcom/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464