মুলার দাম কেজিতে ১ টাকা, ফুলকপি ২ টাকায়
শীতের প্রকোপে জয়পুরহাটে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে, তবে বাজারে কৃষকেরা পাচ্ছেন না ন্যায্য মূল্য। বর্তমানে মুলা প্রতি মন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০ টাকায়, এবং ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস মাত্র ২ টাকায়।
কৃষকদের দাবি, এই দামে সবজি বিক্রি করে উৎপাদন খরচও ওঠানো সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে, জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, এ বছর প্রচুর সবজি উৎপাদন হওয়ায় বাজারে দাম কমে গেছে। জয়পুরহাট অঞ্চলে এবার শীতকালীন সবজির ব্যাপক ফলন হয়েছে, তবে সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে মুলার।
পাইকারি বাজারে মুলার দাম এখন কেজি প্রতি মাত্র ১ টাকা। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, জমি তৈরি থেকে সার, বীজ, কীটনাশকসহ প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শুরুর দিকে মুলার দাম প্রতিমন ২,৫০০ টাকা থাকলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে মাত্র ৪০ টাকায়।
জয়পুরহাটের নতুন বাজারের ব্যবসায়ী ইয়াকুব আলী জানান, ঢাকায় কাওরানবাজার ও যাত্রাবাড়ীর আড়তে সবজি পরিবহন করতে গাড়ি ভাড়া ও শ্রমিক খরচ বেড়ে গেছে। প্রতি মণ মুলা বা ফুলকপি পরিবহনে খরচ হয় ৩০০-৩৫০ টাকা, ফলে ব্যবসায়ীরাও খুব বেশি লাভ করতে পারছেন না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সবজি উৎপাদন হয়েছে। কৃষকেরা একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে মুলা ও ফুলকপি চাষ করায় হাটবাজারে সরবরাহ বেড়েছে। তবে সংরক্ষণ সুবিধা না থাকায় ক্ষেত থেকে উত্তোলনের পরই সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ বছর জয়পুরহাট জেলায় ৪,৭৩০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৫,০০০ হেক্টর জমিতে।
বাজারে সিন্ডিকেট ও সংরক্ষণ সমস্যার কারণে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসলের প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন না। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষি বিভাগ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
জয়পুরহাটের কৃষকেরা এ মুহূর্তে চরম সংকটে রয়েছেন। কৃষি বিভাগের সহায়তা এবং সুষ্ঠু বাজারব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।