গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের দাবিতে হবিগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা
মুজিববাদ-ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম থামেনি: এনসিপির নাহিদ
মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং সামাজিক ন্যায়ের দাবিতে হবিগঞ্জে জোরালো পদযাত্রা ও সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলের ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বিকেলে শহরের কেন্দ্রীয় সাইফুর রহমান টাউন হলের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম শুরু করেছি তা এখনও শেষ হয়নি। আমরা যে নতুন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম মানবিক, বৈষম্যহীন, অধিকারসম্পন্ন, তা এখনও আসেনি। এই লড়াই চলবে অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত।”
তিনি আরও বলেন, “আজ দেশের স্বাস্থ্যখাত ভেঙে পড়েছে। হবিগঞ্জসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ সামান্য চিকিৎসার জন্য সিলেট বা ঢাকায় ছুটে যায়। এটা কখনোই উন্নত রাষ্ট্রের চিত্র হতে পারে না। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ন্যায্যতা সবার জন্য নিশ্চিত থাকবে।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “আমাদের সীমান্তে নিয়মিতভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। পুশ–ইন হচ্ছে। অথচ সরকার নীরব। এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক দমন–পীড়নের বিরুদ্ধে গণজাগরণ গড়ে তুলতে চাই।”
সমাবেশ শুরুর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এনসিপি নেতারা গাড়ি বহর নিয়ে হবিগঞ্জ শহরের সার্কিট হাউজে পৌঁছান। সেখানে ‘জুলাই আন্দোলনে’ শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তারা। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সার্কিট হাউজ থেকে একটি সুশৃঙ্খল পদযাত্রা শুরু হয়, যা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে টাউন হল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ দলের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
নেতারা বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায়, রাজনৈতিক গুণগত পরিবর্তনে এবং গণতন্ত্র ও মানবিকতার শাসন ফিরিয়ে আনতে এনসিপি মাঠে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।”
উল্লেখ্য, জুলাই মাসজুড়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে। এর অংশ হিসেবেই হবিগঞ্জে এই কর্মসূচি পালিত হয়।