ঢাকা ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানুষের ঘুম হারাম বাগেরহাটে চলছে গরু ও মটর সাইকেল লুটের মহাউৎসব

হারুন শেখ, বাগেরহাট প্রতিনিধি::

বাগেরহাটে শ্রমিক লীগ থেকে যুবদলের কর্মী জনির লুটপাটের আতঙ্কে মানুষের ঘুম হারাম ,জোর পূর্বক ঘের দখল গরু লুট, মটরসাইকেল কেড়ে নেওয়ার ও অভিযোগ উঠলেও পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে দাবী করেছেন ভুক্ত ভোগীদের, পুলিশ ও সেনা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দিয়ে বাড়ী ছাড়া এলাকার সংখ্যালঘু সহ কয়েকটি পরিবারের পুরুষ সদস্যরা।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বিঞ্চুপুর ইউনিয়নের মান্দ্রা ও চিতলমারী উপজেলার নাসির পুর গ্রামের নারীদের বুক ফাটা কান্না। এলাকার বিএনপি নেতা নওশের হাওলাদার এর ৩ পুত্র রনি, জনি (শ্রমিকলীগের কর্মী) ও রানার অত্যাচারে মুখ খুলতে পারছেনা অসহায় এ নারীরা, ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ভয়ে লোক লজ্জার ভয়ে এবং শ্লীলতা হানির বিষয়ও মুখ খুলতে পারছেনা এ ভুক্তভোগী নারীরা,মুখ বুঝে সব ফুফিয়ে ফুফিয়ে কানছে আর উপর আল্লাহর কাছে বিচার চাইছে তারা।।

এ বিষয়ে মান্দ্রা গ্রামের জয়নাল ঘরামির কন্যা খায়রুন আক্তার বলেন, আমার পিতা মানুষের বাড়ী দিন মজুরের কাজ করতো আমি গার্মেন্টসে চাকুরী করে বাবাকে একটি গরু কিনে দিই সেই গরু থেকে আরও ৫ টি গরু হয়েছে।

গত ৬ আগস্ট রাত ৮ টার দিকে আমাদের এলাকার নওশের হাওলাদারের ছেলে রনি, জনি ও রানা দলবল নিয়ে আমাদের বাড়ী এসে গোয়ালঘর থেকে ৫ টি গরু নিয়ে যায় এসময় আমার বৃদ্বমা বাধাদিলে তাকে বেদর মারধর করে। তারা আমাদের ঘের দখল থেকে ৫০ হাজার টাকার মাছ মেরে নিয়ে যায়। আমাদের এলাকা ছেড়ে চলেযেতে বলেছে। বাগেরহাট থানাও অভিযোগ দিয়েছি পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

মান্দ্রা গ্রামের মনসুর শেখের কন্যা স্বামী পরিত্যাক্ত লিমা আক্তার বলেন, আমার পিতা ও দুই ভাই ৫ আগষ্ঠ থেকে বাড়ী ছাড়া। আমরাও পাশের প্রতিবেশির বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছিলাম । গত ৬আগষ্ট এলাকার নওশের হাওলাদারের ছেলে যুবলীগ নেতা জনি হাওলাদারের নেতৃত্বে রনি, রানা, নাজমুল, রেজা, রফিক সহ আরো কয়েকজনে আমাদের ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে বড় ভাইয়ে আর এক্স মটর সাইকেল , আমার শেলাই মেশিন, ও প্রায় ৭০ হাজার টাকার সিটকাপড় নিয়ে যায়। এসময় জনি আমার সাথে খারাপ আচরন করে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। এ বিষয় কাউকে কিছু বলতে পারছিনা মুখবুঝে কান্না ছাড়া কোন উপায় নাই। লিমা আরো বলেন ছোট ভাইয়ের এফজেট মটর সাইকেল পাশের বাড়ী রাখাছিল ৭ আগস্ট জনি এসে নিয়ে গেছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

এদিকে চিতলমারী উপজেলার নাছির পুর গ্রামের ঝড়ু গোলদার বলেন, ৫ আগষ্ট রাত ৮ টারদিকে দেশী অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ীতে যায় বাগেরহাট সদর উপজেলার মান্দ্রা এলাকার নওশের হাওলাদারের ছেলে রানা হাওলাদার, জনি হাওলাদার (সাবেক শ্রমিকলীগ কর্মী), রনি হাওলাদার এর নেতৃত্বে সিরাজ হাওলাদার, মোবারেক হাওলাদার, রেজা শেখ, আনো হাওলাদার, মিজান শেখ, মিলন ফকির আমার ছোট ভাই হরে কৃষ্ণ এর গোয়ালে থাকা গরু নিয়া যায়। ভয়ে আমার ৫ টি গরু চিতলমারীর রায় গ্রামে আমার জামাতা শুকুমার হীরার বাড়ীতে রেখে আসি। ঐ লুটকারীরা সেখান থেকে ৬ আগস্ট খিলিগাতি গ্রামের মিলন ফকিরের নেতৃত্বে আমার ৫ টি গরু নিয়ে আসে। এছাড়া তারা আমার ঘের থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মাছ ধরে নিয়েছে। আমি এ বিষয় চিতলমারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, বিঞ্চুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল পাইক ও শ্রমিকলীগের সভাপতি সুমন হাওলাদারের সাথে থেকে গত আওয়ামীলীগের আমলে নওশের হাওলাদারের ছেলে জনি হাওলাদার ও তার পরিবার এলাকার সাধারন মানুষ ও জামাত বিএনপির উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে আর এখন যুবদলের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে এরা তিন ভাই এর বিহিত হওয়া প্রযোজন।

এ বিষয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম আ্যান্ড অপস মোঃ রাসেলুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোড়েলগঞ্জ এর কয়েকটি অভিযোগ এসেছে আমরা সকল তথ্যই ওসি সাহেবদের দিয়েছি এটা আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছি। পুলিশ কোন দখল, বেদখল, বা অবৈধ্য দখল কোন ভাবেই টলারেট করবে না। আমরা স্থানীয় যে ছাত্র সমন্বয়ক ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে বিট পুলিশিং কমিউনিটি পুলিশিং এর ব্যানারে থানা পুলিশ যে কার্যক্রম করে সেটা করবে। যেই অপরাধি হোক না কেন তার বিরুদ্বে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৯:৪২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪
৫১১ বার পড়া হয়েছে

মানুষের ঘুম হারাম বাগেরহাটে চলছে গরু ও মটর সাইকেল লুটের মহাউৎসব

আপডেট সময় ০৯:৪২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

বাগেরহাটে শ্রমিক লীগ থেকে যুবদলের কর্মী জনির লুটপাটের আতঙ্কে মানুষের ঘুম হারাম ,জোর পূর্বক ঘের দখল গরু লুট, মটরসাইকেল কেড়ে নেওয়ার ও অভিযোগ উঠলেও পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে দাবী করেছেন ভুক্ত ভোগীদের, পুলিশ ও সেনা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দিয়ে বাড়ী ছাড়া এলাকার সংখ্যালঘু সহ কয়েকটি পরিবারের পুরুষ সদস্যরা।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বিঞ্চুপুর ইউনিয়নের মান্দ্রা ও চিতলমারী উপজেলার নাসির পুর গ্রামের নারীদের বুক ফাটা কান্না। এলাকার বিএনপি নেতা নওশের হাওলাদার এর ৩ পুত্র রনি, জনি (শ্রমিকলীগের কর্মী) ও রানার অত্যাচারে মুখ খুলতে পারছেনা অসহায় এ নারীরা, ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ভয়ে লোক লজ্জার ভয়ে এবং শ্লীলতা হানির বিষয়ও মুখ খুলতে পারছেনা এ ভুক্তভোগী নারীরা,মুখ বুঝে সব ফুফিয়ে ফুফিয়ে কানছে আর উপর আল্লাহর কাছে বিচার চাইছে তারা।।

এ বিষয়ে মান্দ্রা গ্রামের জয়নাল ঘরামির কন্যা খায়রুন আক্তার বলেন, আমার পিতা মানুষের বাড়ী দিন মজুরের কাজ করতো আমি গার্মেন্টসে চাকুরী করে বাবাকে একটি গরু কিনে দিই সেই গরু থেকে আরও ৫ টি গরু হয়েছে।

গত ৬ আগস্ট রাত ৮ টার দিকে আমাদের এলাকার নওশের হাওলাদারের ছেলে রনি, জনি ও রানা দলবল নিয়ে আমাদের বাড়ী এসে গোয়ালঘর থেকে ৫ টি গরু নিয়ে যায় এসময় আমার বৃদ্বমা বাধাদিলে তাকে বেদর মারধর করে। তারা আমাদের ঘের দখল থেকে ৫০ হাজার টাকার মাছ মেরে নিয়ে যায়। আমাদের এলাকা ছেড়ে চলেযেতে বলেছে। বাগেরহাট থানাও অভিযোগ দিয়েছি পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি।

মান্দ্রা গ্রামের মনসুর শেখের কন্যা স্বামী পরিত্যাক্ত লিমা আক্তার বলেন, আমার পিতা ও দুই ভাই ৫ আগষ্ঠ থেকে বাড়ী ছাড়া। আমরাও পাশের প্রতিবেশির বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছিলাম । গত ৬আগষ্ট এলাকার নওশের হাওলাদারের ছেলে যুবলীগ নেতা জনি হাওলাদারের নেতৃত্বে রনি, রানা, নাজমুল, রেজা, রফিক সহ আরো কয়েকজনে আমাদের ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে বড় ভাইয়ে আর এক্স মটর সাইকেল , আমার শেলাই মেশিন, ও প্রায় ৭০ হাজার টাকার সিটকাপড় নিয়ে যায়। এসময় জনি আমার সাথে খারাপ আচরন করে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। এ বিষয় কাউকে কিছু বলতে পারছিনা মুখবুঝে কান্না ছাড়া কোন উপায় নাই। লিমা আরো বলেন ছোট ভাইয়ের এফজেট মটর সাইকেল পাশের বাড়ী রাখাছিল ৭ আগস্ট জনি এসে নিয়ে গেছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।

এদিকে চিতলমারী উপজেলার নাছির পুর গ্রামের ঝড়ু গোলদার বলেন, ৫ আগষ্ট রাত ৮ টারদিকে দেশী অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ীতে যায় বাগেরহাট সদর উপজেলার মান্দ্রা এলাকার নওশের হাওলাদারের ছেলে রানা হাওলাদার, জনি হাওলাদার (সাবেক শ্রমিকলীগ কর্মী), রনি হাওলাদার এর নেতৃত্বে সিরাজ হাওলাদার, মোবারেক হাওলাদার, রেজা শেখ, আনো হাওলাদার, মিজান শেখ, মিলন ফকির আমার ছোট ভাই হরে কৃষ্ণ এর গোয়ালে থাকা গরু নিয়া যায়। ভয়ে আমার ৫ টি গরু চিতলমারীর রায় গ্রামে আমার জামাতা শুকুমার হীরার বাড়ীতে রেখে আসি। ঐ লুটকারীরা সেখান থেকে ৬ আগস্ট খিলিগাতি গ্রামের মিলন ফকিরের নেতৃত্বে আমার ৫ টি গরু নিয়ে আসে। এছাড়া তারা আমার ঘের থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মাছ ধরে নিয়েছে। আমি এ বিষয় চিতলমারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, বিঞ্চুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল পাইক ও শ্রমিকলীগের সভাপতি সুমন হাওলাদারের সাথে থেকে গত আওয়ামীলীগের আমলে নওশের হাওলাদারের ছেলে জনি হাওলাদার ও তার পরিবার এলাকার সাধারন মানুষ ও জামাত বিএনপির উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে আর এখন যুবদলের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে এরা তিন ভাই এর বিহিত হওয়া প্রযোজন।

এ বিষয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম আ্যান্ড অপস মোঃ রাসেলুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোড়েলগঞ্জ এর কয়েকটি অভিযোগ এসেছে আমরা সকল তথ্যই ওসি সাহেবদের দিয়েছি এটা আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য বলেছি। পুলিশ কোন দখল, বেদখল, বা অবৈধ্য দখল কোন ভাবেই টলারেট করবে না। আমরা স্থানীয় যে ছাত্র সমন্বয়ক ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে বিট পুলিশিং কমিউনিটি পুলিশিং এর ব্যানারে থানা পুলিশ যে কার্যক্রম করে সেটা করবে। যেই অপরাধি হোক না কেন তার বিরুদ্বে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।