মাধবপুরে সরকারী কালভার্টে চলাচলে বাঁধা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পরও ফের বন্ধ
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আন্দিউরা ইউনিয়নে সরকারী অর্থায়নে নির্মিত একটি কালভার্টে স্থানীয়দের চলাচল পুনরায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মাত্র চার দিন আগে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কালভার্টের গেট খুলে চলাচল উন্মুক্ত করা হলেও, ফের বাঁশ দিয়ে পথটি বন্ধ করে দিয়েছেন রীনা বেগম নামে এক মহিলা।
সরজমিনে দেখা যায়, কালভার্টটির প্রবেশমুখে তিনটি বাঁশ বেঁধে রাখা হয়েছে, যা দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এর ফলে গ্রামের জনগণসহ স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাফি বলেন, “কালভার্টটি বন্ধ থাকায় আমরা স্কুলে যেতে পারছি না। পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে।” সাবেক মেম্বার আব্দুল কাইয়ূমসহ শতাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, সরকারী অর্থায়নে নির্মিত এই কালভার্ট অবৈধভাবে বন্ধ করে রাখার ফলে গ্রামের লোকজনের দৈনন্দিন চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের নথি অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিএসপি প্রকল্পের অধীনে ২ লাখ টাকা ব্যয়ে আন্দিউড়া চকবাজারের দক্ষিণে আবু মিয়ার বাড়ির পাশে এই আরসিসি কালভার্ট নির্মিত হয়। এরপর থেকে এটি স্থানীয়দের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। তবে প্রবাসী আবু মিয়ার স্ত্রী রীনা বেগম দাবি করেছেন, কালভার্টটি তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা গত বছরের ২ এপ্রিল রীনা বেগমের স্থাপিত গেট অপসারণের জন্য আবেদন করেন। প্রশাসনের সরেজমিন তদন্তে রীনা বেগম কর্তৃক পথ বন্ধ করার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। প্রশাসন একাধিকবার সতর্ক করার পর গত ৮ জানুয়ারি লোহার গেট খুলে দেয়। কিন্তু ১১ জানুয়ারি আবারও বাঁশ দিয়ে পথটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ জাহেদ বিন কাশেম বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে একবার পথটি উন্মুক্ত করেছি। যদি আবারো এমন ঘটনা ঘটে, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
রীনা বেগম দাবি করেছেন, “কালভার্টটি আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকাবাসী লিখিতভাবে জানিয়েছে, তারা এটি ব্যবহার করবে না। এখন কেউ কেউ আমার নামে অপপ্রচার করছে।”
এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে এটি সরকারি স্থাপনাগুলো দখলের দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াবে। জনস্বার্থে নির্মিত এই কালভার্ট উন্মুক্ত রাখতে গ্রামবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।