ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাতা কমিটি ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তার যোগসাজসে

মাধবপুরে মৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আত্মসাৎ!

মুজাহিদ মসি::

ছবি-সংগ্রহীত

হবিগঞ্জের মাধবপুরে ভাতা কমিটি ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তার যোগসাজসে এক মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় বেলঘর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহের মিয়া মারা গেলে নিয়ম অনুযায়ী তার বোন হামিদা খাতুন ভাতা গ্রহণ করে আসছিল। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে হামিদা খাতুনও মারা গেলে ৮ মাসে প্রায় ১ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা বিভিন্ন সময়ে কমিটির দুজন সদস্য মুক্তিযোদ্ধা এনাম খা ও জারু মিয়া গং সোনালী ব্যাংকের মাধবপুর শাখার ব্যাংক কর্মকর্তাদের যুগসাজসে আত্মসাৎ করতে থাকে। কিভাবে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের বিনা স্বাক্ষরে টাকা ডেভিট হয়েছে এ নিয়েও উপজেলায় সমালোচনার ঝড় বইছে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদেরও বিরুদ্ধে।

হামিদা খাতুনের সোনালী ব্যাংক মাধবপুর শাখার একাউন্ট নাম্বার ৫৭০৮৩০১০১৯৭৩০ হইতে বিভিন্ন চেক এর মাধ্যমে জালিয়াতি করে মৃত ব্যাক্তির একাউন্ট থেকে গত বছর ২ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন চেক এর মাধ্যমে প্রায় ১ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

পরে বিষয়টি জানাজানি হলে হামিদা খাতুন এর ওয়ারিশগণ মাধবপুরের ইউএনও এর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

শোনা যায়, ওই ভাতা কমিটির ২ সদস্য এনাম খা ও জারু মিয়ার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত ভবন বীরনিবাস গ্রহণের ক্ষেত্রেও ছয়-নয়ের অভিযোগ অভিযোগ রয়েছে। মাধবপুরের ইউএনও একেএম ফয়সাল এদের জবাবদিহিতার আওতায় আনেন না। ফলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিসকে ঘুষ বাণিজ্য আখড়া বানিয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা কমিটির ভাতা কমিটির সভাপতি মাধবপুরের ইউএনও একেএম ফয়সাল। এ পর্যন্ত এদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। গত কয়েক দিন আগে ওই অভিযুক্তরা মুক্তিযোদ্ধার একাউন্টে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা জমা দিয়ে দেন।

মাধবপুর শাখা সোনালী ব্যাংকে এর ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান চৌধুরী জানান, আমি নতুন এই শাখায় বদলি হয়ে এসেছি। ব্যাংক কর্মকর্তার গাফিলতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে তদন্ত করতে ইউএনও নির্দেশে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড.আব্দুস সাত্তার বেগকে প্রধান করে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ আলী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব সরকারকে সদস্য করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান ড.আব্দুস সাত্তার বেক বলেন, আমরা ইতিমধ্যে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে ডাকিয়েছি যেহেতু বিশেষ বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে তদন্তের পরে সবকিছু নিয়ে আমরা প্রেস ব্রিফিং করে জানাবো।

 

এদিকে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তার দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে আশ্ব্যস্ত করেছেন সোনালী ব্যাংকের অভিযোগ শাখার ডিজিএম মোঃ খাইরুল আলম।

এ ব্যাপারে মাধবপুরের ইউএনও ও মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা কমিটির সভাপতি একেএম ফয়সালকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও ফোন রিসিভ হয়নি।

তবে উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, ইউএনও কোন দোষ করেননি। সরল বিশ্বাসে অনেক সময় ইউএনও এসবের অনুমোদন দিয়ে থাকলেও মূল দায় ওই দুইজন মুক্তিযোদ্ধার। যেহেতু বিষয়টি গঠিত কমিটিতে তদন্ত চলছে তাই পরে সব স্পষ্ট হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি টাইম লাইনে শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চেকপোস্ট

Checkpost is one of the most popular Bengali news portal and print newspaper in Bangladesh. The print and online news portal started its operations with a commitment to fearless, investigative, informative and unbiased journalism.
আপডেট সময় ০৯:২২:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪
৫৮৯ বার পড়া হয়েছে

ভাতা কমিটি ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তার যোগসাজসে

মাধবপুরে মৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আত্মসাৎ!

আপডেট সময় ০৯:২২:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

হবিগঞ্জের মাধবপুরে ভাতা কমিটি ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তার যোগসাজসে এক মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় বেলঘর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহের মিয়া মারা গেলে নিয়ম অনুযায়ী তার বোন হামিদা খাতুন ভাতা গ্রহণ করে আসছিল। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে হামিদা খাতুনও মারা গেলে ৮ মাসে প্রায় ১ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা বিভিন্ন সময়ে কমিটির দুজন সদস্য মুক্তিযোদ্ধা এনাম খা ও জারু মিয়া গং সোনালী ব্যাংকের মাধবপুর শাখার ব্যাংক কর্মকর্তাদের যুগসাজসে আত্মসাৎ করতে থাকে। কিভাবে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের বিনা স্বাক্ষরে টাকা ডেভিট হয়েছে এ নিয়েও উপজেলায় সমালোচনার ঝড় বইছে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদেরও বিরুদ্ধে।

হামিদা খাতুনের সোনালী ব্যাংক মাধবপুর শাখার একাউন্ট নাম্বার ৫৭০৮৩০১০১৯৭৩০ হইতে বিভিন্ন চেক এর মাধ্যমে জালিয়াতি করে মৃত ব্যাক্তির একাউন্ট থেকে গত বছর ২ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন চেক এর মাধ্যমে প্রায় ১ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

পরে বিষয়টি জানাজানি হলে হামিদা খাতুন এর ওয়ারিশগণ মাধবপুরের ইউএনও এর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

শোনা যায়, ওই ভাতা কমিটির ২ সদস্য এনাম খা ও জারু মিয়ার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত ভবন বীরনিবাস গ্রহণের ক্ষেত্রেও ছয়-নয়ের অভিযোগ অভিযোগ রয়েছে। মাধবপুরের ইউএনও একেএম ফয়সাল এদের জবাবদিহিতার আওতায় আনেন না। ফলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিসকে ঘুষ বাণিজ্য আখড়া বানিয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা কমিটির ভাতা কমিটির সভাপতি মাধবপুরের ইউএনও একেএম ফয়সাল। এ পর্যন্ত এদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। গত কয়েক দিন আগে ওই অভিযুক্তরা মুক্তিযোদ্ধার একাউন্টে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা জমা দিয়ে দেন।

মাধবপুর শাখা সোনালী ব্যাংকে এর ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান চৌধুরী জানান, আমি নতুন এই শাখায় বদলি হয়ে এসেছি। ব্যাংক কর্মকর্তার গাফিলতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে তদন্ত করতে ইউএনও নির্দেশে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড.আব্দুস সাত্তার বেগকে প্রধান করে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ আলী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব সরকারকে সদস্য করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান ড.আব্দুস সাত্তার বেক বলেন, আমরা ইতিমধ্যে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে ডাকিয়েছি যেহেতু বিশেষ বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে তদন্তের পরে সবকিছু নিয়ে আমরা প্রেস ব্রিফিং করে জানাবো।

 

এদিকে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তার দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে আশ্ব্যস্ত করেছেন সোনালী ব্যাংকের অভিযোগ শাখার ডিজিএম মোঃ খাইরুল আলম।

এ ব্যাপারে মাধবপুরের ইউএনও ও মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা কমিটির সভাপতি একেএম ফয়সালকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও ফোন রিসিভ হয়নি।

তবে উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, ইউএনও কোন দোষ করেননি। সরল বিশ্বাসে অনেক সময় ইউএনও এসবের অনুমোদন দিয়ে থাকলেও মূল দায় ওই দুইজন মুক্তিযোদ্ধার। যেহেতু বিষয়টি গঠিত কমিটিতে তদন্ত চলছে তাই পরে সব স্পষ্ট হবে।