চট্টগ্রামে শিশু যৌন নিপীড়ন
মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ দুইজনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রামে শিশু যৌন নিপীড়নের দায়ে পৃথক দুই মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মাকসুদুর রহমান ও জোবায়ের হোসেন। মাকসুদুর রহমান পতেঙ্গার জামিয়াতুল মদিনা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার বাসিন্দা। অন্যদিকে, জোবায়ের নোয়াখালীর চরজব্বর থানার পূর্ব চরভাটা এলাকার বাসিন্দা।
প্রথম মামলায় ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় মাকসুদ পাঁচ বছরের এক শিশুকে মাদ্রাসার ভেতরে নিজের রুমে ডেকে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। শিশুর বাবা পরবর্তীতে পতেঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ ২০২১ সালের ২৭ জুন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত এই রায় দেন।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় মামলায় ২০১৯ সালের ৬ জুলাই চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকায় ১৩ বছর বয়সী এক শিশুকে যৌন নিপীড়ন করেন জোবায়ের। ভিকটিমের মা পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র জমা দিলে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করা হয়। সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত জোবায়েরের বিরুদ্ধে রায় দেন।
দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মাকসুদ ও জোবায়ের উভয়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রায়ের সময় মাকসুদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। জোবায়ের রায়ের সময় উপস্থিত ছিলেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই রায় যৌন নিপীড়নের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আদালতের এই রায় শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইনের কঠোর প্রয়োগের উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হবে।