ভোমরা সীমান্তে আবারও বেপরোয়া শামীম, বিজিবি সদস্যকে নিয়ে অপপ্রচার
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মাদক ব্যবসা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর শুরু হয় কোটি টাকার মাদকের অবাধ বেচাকেনা ও চোরাচালান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি সত্ত্বেও থামছে না এ অপতৎপরতা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোমরার শ্রীরামপুর এলাকার কুখ্যাত মাদক কারবারি আরশাদ আলী ওরফে ভোদুর ছেলে শামীম হোসেন ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। জেল থেকে জামিনে বেরিয়েই তিনি আবারও গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। শামীমের শ্বশুরবাড়ির জামাই হালিম মাস্টারকেও এই চক্রের অন্যতম নিয়ন্ত্রক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
শামীমের ভোমরা টাওয়ার মোড়ের বাড়ি থেকেই পাইকারি ও খুচরা মাদক চালান হয়। তার দুই বোন লিপি খাতুন ও পাপিয়া খাতুন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ পুরো পরিবার মাদক ব্যবসায় জড়িত।
গত ৮ জুন বিজিবি সদস্য ইমরান হোসেনের নেতৃত্বে এক অভিযানে মাদকসহ হাতে-নাতে ধরা পড়ে শামীম। বর্তমানে জামিনে বের হয়ে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে ওই চৌকস বিজিবি সদস্যকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে সে। এর মাধ্যমে বিজিবিকে বিভ্রান্ত করে পুনরায় অবাধে মাদক ব্যবসা চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বহু মাদক মামলা থাকলেও শামীম ও হালিম মাস্টারের দাপট কমেনি। বরং প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় তাদের মাদক সাম্রাজ্য দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। তারা কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে জমি-জমা ও দালানকোঠা গড়ে তুলেছে।
এ নিয়ে ভোমরা বন্দরের ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কঠোর সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনসাধারণ সক্রিয় না হলে সীমান্তে মাদক আগ্রাসন রোধ সম্ভব নয়।
বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশরাফুল হক বলেন, “বিজিবি প্রতিদিন মাদকবিরোধী টহল চালাচ্ছে। সীমান্তে অপরাধ দমনে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
এদিকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, “ভোমরা সীমান্ত সম্পূর্ণ বিজিবির নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও আমরা মাদক দমনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। তবে জনসাধারণকে এগিয়ে আসতে হবে।”
এলাকাবাসীর প্রশ্ন, এত মামলা, এত অভিযোগ সত্ত্বেও কীভাবে বহাল তবিয়তে চলছে শামীম-হালিম চক্রের মাদক সাম্রাজ্য? তারা প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেছেন, নইলে সীমান্তবর্তী তরুণ সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়বে।